আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 25, আল ফুরকান (বিচারের মানদন্ড) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 25, আল ফুরকান (বিচারের মানদন্ড)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৭৭, রুকু সংখ্যা: ০৬

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০৩আল্লাহ এক। শিরকের অসারতা।
০৪-০৯কুরআন ও রসূলের সত্যতার যুক্তি।
১০-২০আখিরাত অস্বীকারকারীরা জাহান্নামি। মুশরিকদের অলি ও উপাস্যরা মুশরিকদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ করবে। সকল নবীই মানুষ ছিলেন।
২১-৩৪অবিশ্বাসীদের হাস্যকর দাবি। বিচারের দিনটি হবে কাফিরদের জন্য কঠিন। রসূল বলবেন, হে আল্লাহ আমার লোকেরাই কুরআন পরিত্যাগ করে রেখেছিল। কুরআন একত্রে নাযিল না করার কারণ।
৩৫-৪৪বিভিন্ন জাতি কর্তৃক নবীদের প্রত্যাখ্যান এবং তাদের পরিণতি।
৪৫-৬২মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ। আল্লাহর প্রতি মানুষের অকৃতজ্ঞতা।
৬৩-৭৭আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের গুণাবলি।
25-1 : বড়ই বরকতওয়ালা সেই তিনি যিনি নাযিল করেছেন আল ফুরকান (আল কুরআন) তাঁর দাসের প্রতি, যাতে করে সে হতে পারে জগদ্বাসীর জন্যে একজন সতর্ককারী।
25-2 : তিনি সেই সত্তা, মহাকাশ ও পৃথিবীর কর্তৃত্ব যাঁর। তিনি গ্রহণ করেন না সন্তান। তাছাড়া তাঁর কর্তৃত্বেও কেউ নেই শরিক। তিনিই সৃষ্টি করেছেন প্রতিটি জিনিস এবং প্রত্যেকের জন্যে নির্ধারণ করেছেন যথোপযুক্ত নির্ধারণ।
25-3 : অথচ তারা তাঁর পরিবর্তে ইলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করেছে অন্যদের, যারা কিছুই সৃষ্টি করেনা, বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। তাছাড়া তারা নিজেদেরও ক্ষতি কিংবা উপকার করার ক্ষমতা রাখেনা। এছাড়া তারা মউত, হায়াত কিংবা পুনরুত্থানের ক্ষমতা রাখেনা।
25-4 : কাফিররা বলে: ‘এটা (এই কুরআন) একটা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা সে (মুহাম্মদ সা.) নিজেই রচনা করে নিয়েছে এবং অন্য লোকেরা এ ব্যাপারে তাকে সহযোগিতা করেছে।’ এসব কথা বলে তারা চরম যুলম ও মিথ্যায় নিমজ্জিত হয়েছে।
25-5 : তারা বলে: ‘এ - তো সেকালের লোকদের কাহিনী যা সে লিখিয়ে নিয়েছে এবং সকাল সন্ধ্যায় এগুলো তার কাছে পাঠ করা হয়।’
25-6 : তুমি বলো: ‘এ (কুরআন) নাযিল করেছেন তিনি, যিনি জানেন মহাকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত রহস্য। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল দয়াবান।’
25-7 : তারা আরো বলে: ‘‘এ কেমন রসূল, যে খাবারও খায় এবং হাট - বাজারেও চলাফেরা করে! তার কাছে কোনো ফেরেশতা কেন নাযিল করা হলো না, যে তার সাথে সতর্ককারী হিসেবে থাকতো?
25-8 : অথবা তাকে কোনো ধন - ভান্ডার দেয়া হয়নি কেন, কিংবা তার একটি বাগান থাকলো না কেন যা থেকে সে নিজের আহার সংগ্রহ করতো?’’ যালিমরা আরো বলছে: ‘তোমরা তো একটা জাদুগ্রস্ত লোকের পেছনে ছুটছো।’
25-9 : দেখো, তারা তোমার কী উদ্ভট ধরনের দৃষ্টান্ত দিচ্ছে? তারা বিপথগামী হয়ে গেছে। সুতরাং তারা আর পথ খুঁজে পাবেনা।
25-10 : বড়ই বরকতওয়ালা তিনি, যিনি চাইলে তোমাকে দিতে পারেন এর চাইতে উত্তম উদ্যানসমূহ, যেগুলোর নীচে দিয়ে বহমান থাকবে নদ - নদী - নহর। এছাড়া তিনি তোমাকে দিতে পারেন প্রাসাদসমূহ।
25-11 : আসল কথা হলো, তারা কিয়ামতকেই অস্বীকার করছে, আর আমরা কিয়ামত অস্বীকারকারীদের জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছি সায়ীর (জ্বলন্ত আগুন)।
25-12 : তারা যখন দূর থেকে সেটাকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে সেটার ক্রুদ্ধ গর্জন এবং (সেখানকার) আর্তচিৎকার।
25-13 : যখন তাদেরকে শৃঙ্খলিত অবস্থায় সেটার কোনো এক সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা সেখানে মৃত্যুকে ডাকবে।
25-14 : তাদের বলা হবে: ‘আজ তোমরা একটি মৃত্যুকে ডেকোনা, ডাকো অনেক মৃত্যুকে।’
25-15 : ওদের জিজ্ঞেস করো: ‘এটাই কি ভালো, নাকি চিরস্থায়ী জান্নাত যার ওয়াদা মুত্তাকিদের দেয়া হয়েছে?’ ওটাই হবে তাদের পুরস্কার এবং ফিরে যাবার জায়গা।
25-16 : চিরকাল তারা সেখানে যা চাইবে, তাই পাবে। এই ওয়াদা পালন করা তোমার প্রভুর দায়িত্ব।
25-17 : যেদিন তাদেরকে হাশর (সমবেত) করা হবে এবং তারা আল্লাহ ছাড়া আর যাদের ইবাদত করতো তাদেরকেও, সেদিন তিনি তাদের জিজ্ঞেস করবেন: ‘তোমরাই কি আমার এই বান্দাদের বিপথগামী করেছো। নাকি তারা নিজেরাই সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে?’
25-18 : তারা বলবে: ‘তুমি পবিত্র ও মহান, আমরা তো তোমার পরিবর্তে অন্যদেরকে অলি হিসেবে গ্রহণ করতে পারিনা। তবে তুমিই তো তাদেরকে এবং তাদের বাপ দাদাদেরকে ভোগের সামগ্রী দিয়েছিলে; ফলে তারা আয্ যিকির (আল কিতাব) ভুলে গেছে এবং তারা পরিণত হয়েছে এক বুরা (ধ্বংস প্রাপ্ত) জাতিতে।
25-19 : (আল্লাহ মুশরিকদের বলবেন:) তোমরা যা বলতে তারা (তোমাদের সেই অলিরা) তো তোমাদের সে কথা অস্বীকার করছে। সুতরাং তোমরা শাস্তি ফেরাতে পারবেনা এবং সাহায্যও পাবেনা। তোমাদের মধ্যে যে কেউ যুলুম করবে, তাকে আমরা আস্বাদন করাবো বড় আযাব।
25-20 : তোমার আগে আমরা যতো রসূলই পাঠিয়েছি, তারা সবাই খাবার খেতো এবং হাট - বাজারে যাতায়াত করতো। আমরা তোমাদের পরস্পরকে পরস্পরের জন্যে বানিয়েছি ফিতনা। তোমরা কি সবর অবলম্বন করবে? তোমার প্রভু সর্বদ্রষ্টা।
25-21 : যারা আমাদের সাক্ষাতের আশা করেনা তারা বলে: আমাদের কাছে কেন ফেরেশতা নাযিল হয়না, কিংবা আমরা কেন আমাদের প্রভুকে দেখছিনা? তারা তাদের মনে পোষণ করে অহংকার, আর তারা সীমালঙ্ঘন করেছে বড় আকারের।
25-22 : যেদিন তারা ফেরেশতা দেখবে, সেদিন অপরাধীদের জন্যে কোনো সুসংবাদ থাকবেনা। সেদিন তারা বলবে: ‘এ - তো কঠিন অন্তরায়, রক্ষা করো, রক্ষা করো।’
25-23 : তারা যে আমলই করুক না কেন আমরা তা লক্ষ্য রাখি, আমরা তাদের আমলকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবো (নিষ্ফল করে দেবো)।
25-24 : সেদিন জান্নাতবাসীদের আবাস হবে কল্যাণময়, আর তাদের বিশ্রামের জায়গা হবে অতীব মনোরম।
25-25 : সেদিন মেঘমালাসহ বিদীর্ণ হয়ে পড়বে আকাশ, আর ক্রমান্বয়ে নাযিল করা হবে ফেরশতাদের।
25-26 : সেদিন সমস্ত কর্তৃত্ব থাকবে বাস্তবিকই রহমানের মুষ্টিবদ্ধে। কাফিরদের জন্যে সেই দিনটি হবে বড়ই কঠিন।
25-27 : যালিম সেদিন নিজের দু’হাত কামড়াতে কামড়াতে বলবে: ‘‘হায় আমার ধ্বংস, আমি যদি রসূলের সাথে সঠিক পথ অবলম্বন করতাম!
25-28 : হায়, দুর্ভাগ্য আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করতাম!
25-29 : সে - ই তো আমাকে আয্ যিকির (আল কুরআন) থেকে বিভ্রান্ত করেছিল, আমার কাছে আয্ যিকির (আল কুরআন) পৌঁছার পর। বাস্তবিকই, শয়তান মানুষের জন্যে মহাপ্রতারক।’’
25-30 : আর রসূল বলবে: ‘হে প্রভু! আমার লোকেরাই এ কুরআনকে পরিত্যাগ করে রেখে দিয়েছিল।’
25-31 : এভাবেই আমরা প্রত্যেক নবীর পিছে শত্রু নিয়োগ করেছিলাম অপরাধীদের থেকে। হাদী (পথ প্রদর্শক) এবং নাসির (সাহায্যকারী) হিসেবে তোমার প্রভুই কাফী।
25-32 : কাফিররা বলে: ‘সমগ্র কুরআন তার কাছে একবারে নাযিল করা হলো না কেন?’ (আমরা) এভাবেই করে থাকি এর মাধ্যমে তোমার অন্তরকে মজবুত করার জন্যে, আর এ কারণেই আমরা কুরআনকে তারতিলের
25-33 : তারা তোমার কাছে এমন কোনো সমস্যা উত্থাপন করেনা যার বাস্তব সমাধান এবং উত্তম তফসির (ব্যাখ্যা) আমরা তোমাকে প্রদান করিনা।
25-34 : তাদেরকে উপুড় করে মুখের উপর ভর দিয়ে জাহান্নামে নিয়ে হাশর (সমবেত) করা হবে। তারা অতি নিকৃষ্ট স্থানের এবং অধিক পথভ্রষ্ট লোক।
25-35 : আমরা মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার ভাই হারূণকে তার সাথে বানিয়ে দিয়েছিলাম উযির।
25-36 : তারপর আমরা তাদের বলেছিলাম: তোমরা দু’জন যাও সেই কওমের কাছে যারা প্রত্যাখ্যান করেছে আমাদের আয়াতকে। তারপর আমরা তাদেরকে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে দিয়েছিলাম।
25-37 : আর নূহের কওমকেও, যখন তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল রসূলদের, তখন আমরা তাদের ডুবিয়ে দিয়েছিলাম আর তাদের বানিয়ে দিয়েছিলাম মানবজাতির জন্যে একটি নিদর্শন। আর আমরা যালিমদের জন্যে প্রস্ত্তত করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।
25-38 : এছাড়াও আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি আদ ও সামুদ জাতিকে, কূপওয়ালাদেরকে এবং এদের মধ্যবর্তী বহু প্রজন্মকে।
25-39 : আমরা এদের প্রত্যেকের জন্যে শিক্ষামূলক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছিলাম এবং এদের প্রত্যেককেই আমরা ধ্বংস করে দিয়েছিলাম।
25-40 : তারা তো সেই (বিরান) জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে যার উপর বর্ষিত হয়েছিল নিকৃষ্ট ধরনের বৃষ্টি। তবে কি তারা তা দেখেনা? বরং তারা পুনরুত্থানেই বিশ্বাস রাখেনা।
25-41 : তারা যখন তোমাকে দেখে, তোমাকে কেবল বিদ্রূপের পাত্রই বানায়। তারা বলে: ‘‘এ ব্যক্তিকেই কি আল্লাহ্ রসূল বানিয়েছেন?
25-42 : সে তো আমাদেরকে আমাদের ইলাহ্দের (দেবদেবীর) থেকে দূরে সরিয়ে দিতো যদি আমরা তাদের আনুগত্যে অটল না থাকতাম।’’ যখন তারা আযাব দেখবে তখনই তারা জানতে পারবে কে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে চলে গেছে বহুদূর?
25-43 : ঐ বক্তির ব্যাপারে তোমার রায় কি, যে তার কামনা বাসনাকে নিজের ইলাহ্ (উপাস্য) বানিয়ে নিয়েছে? তুমি কি হবে তার উকিল?
25-44 : তুমি কি মনে করো যে তাদের অধিকাংশ লোক শুনে এবং বুঝে? আসলে তারা তো হলো পশুর মতো বরং তার চাইতেও অধিক পথভ্রান্ত।
25-45 : তুমি কি তোমার প্রভুর (অনুগ্রহের) প্রতি লক্ষ্য করোনা, কিভাবে তিনি ছায়াকে সম্প্রসারিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে তা স্থির করে রাখতে পারতেন। তারপর তিনি সূর্যকে বানিয়েছেন তার (ছায়ার) দলিল (গাইড, দিশারি, পথ প্রদর্শক)।
25-46 : আর আমরা তাকে (ছায়াকে) আমাদের দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।
25-47 : তিনিই তো তোমাদের জন্যে রাতকে বানিয়েছেন আবরণ, আর নিদ্রাকে বানিয়েছেন বিশ্রামের জন্যে শান্তিময় এবং দিনকে বানিয়েছেন জীবন্তর হয়ে উঠার সময়।
25-48 : তিনিই তাঁর রহমত (বৃষ্টি) বর্ষণের আগে বাতাসকে পাঠান সুসংবাদের বাহক হিসেবে এবং (তখন) আমরাই নাযিল করি আসমান থেকে বিশুদ্ধ পানি।
25-49 : তা দিয়ে আমরা জীবিত করে তুলি মৃত জমিনকে এবং তা আমরা পান করাই আমাদের সৃষ্টি করা বহু জীব জানোয়ার এবং মানুষকে।
25-50 : আমরা এই পানি তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে করে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই অকৃতজ্ঞতার মাধ্যমে তা অস্বীকার করে।
25-51 : আমরা চাইলে প্রত্যেক জনপদেই একজন সতর্ককারী (রসূল) পাঠাতে পারতাম।
25-52 : সুতরাং তুমি কাফিরদের আনুগত্য করোনা এবং তুমি এই (কুরআনের) সাহায্যে তাদের সাথে প্রচন্ড জিহাদ চালিয়ে যাও।
25-53 : তিনিই তো দুই দরিয়াকে মিলিতভাবে প্রবাহিত করেছেন, এটি মিষ্টি সুপেয়, আর ওটি লোনা, উভয়ের মাঝে তিনি সৃষ্টি করে দিয়েছেন একটি অন্তরায়, একটি অলঙ্ঘনীয় ব্যবধান।
25-54 : তিনিই সৃষ্টি করেছেন পানি থেকে মানুষ, তারপর তাদের মাঝে বংশীয় এবং বৈবাহিক বন্ধন স্থাপন করে দিয়েছেন। জেনে রাখো, তোমার প্রভু শক্তিমান।
25-55 : তারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদের ইবাদত করে, যারা তাদের না কোনো উপকার করতে পারে, আর না অপকার। কাফিররা তো তাদের প্রকৃত প্রভুর বিরুদ্ধেই অবস্থান গ্রহণ করে।
25-56 : (হে মুহাম্মদ!) আমরা তোমাকে সুসংবাদ দানকারী এবং সতর্ককারী হিসেবে ছাড়া অন্য কোনো দায়িত্ব দিয়ে পাঠাইনি।
25-57 : তুমি বলো: ‘আমি এ দায়িত্ব পালনের জন্যে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাইনা, তবে যে ইচ্ছা করে সে যেনো তার প্রভুর পথ অবলম্বন করে।
25-58 : সেই চিরঞ্জীব সত্তার উপর তুমি তাওয়াক্কুল করো যাঁর কখনো মউত হবেনা এবং তাঁর প্রশংসার সাথে তসবিহ করো। নিজ বান্দাদের পাপের খবর রাখার জন্যে তিনিই কাফী (যথেষ্ট)।
25-59 : তিনিই সৃষ্টি করেছেন মহাকাশ এবং পৃথিবী আর এ দুয়ের মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সবকিছু ছয়টি কালে। তারপর তিনি সমাসীন হয়েছেন আরশের উপর। তিনি আর রহমান - পরম দয়াবান, তাঁর সম্পর্কে যে খবর রাখে তাকে জিজ্ঞাসা করে দেখো।
25-60 : তাদেরকে যখন বলা হয় রহমানকে সাজদা করো, তখন তারা বলে: ‘রহমান আবার কে? তুমি কাউকেও সাজদা করতে বললেই কি আমরা তাকে সাজদা করবো।’ এর ফলে তাদের পলায়নই বৃদ্ধি পায়। (সাজদা)
25-61 : কতো যে বরকতওয়ালা তিনি, যিনি আকাশে তোমাদের জন্যে স্থাপন করেছেন বুরুজ (বিশাল বিশাল নক্ষত্ররাজি) এবং তার মধ্যে রেখেছেন একটি প্রদীপ (সূর্য) আর একটি আলোকিত চাঁদ।
25-62 : তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত আর দিন। তারা একে অপরের পেছনে আসে। এ ব্যবস্থা করেছেন তাদের জন্যে যারা শিক্ষা গ্রহণ করার এরাদা করে, কিংবা এরাদা করে শোকর আদায় করার।
25-63 : রহমানের দাস তো তারাই যারা জমিনের উপর চলাফেরা করে বিনয়ী হয়ে। অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদের সাথে বিতর্ক করতে চায়, তারা বলে: ‘সালাম।’
25-64 : তারা রাত কাটায় তাদের প্রভুর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সাজদা করে করে এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
25-65 : তারা দোয়া করে (এভাবে:) ‘আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে দূর করে দিও জাহান্নামের আযাব, কারণ তার আযাব তো সর্বগ্রাসী।
25-66 : আর জাহানণাম তো নিশ্চিতই বাসস্থান এবং আশ্রয়স্থল হিসেবে অতীব নিকৃষ্ট।’
25-67 : তারা যখন খরচ করে, তখন অপব্যয়ও করেনা, কার্পণ্যও করেনা। বরং এই দুইয়ের মাঝখানে অবলম্বন করে মধ্যপন্থা।
25-68 : তারা আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকেও ইলাহ্ (বানিয়ে নিয়ে) ডাকে না। আল্লাহ্ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন এমন কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করেনা, তবে যথার্থ কারণ থাকলে সঠিক পন্থায়। তারা জিনা করেনা। যে এগুলো করবে, সে অবশ্যি শাস্তি ভোগ করবে।
25-69 : কিয়ামতের দিন তার দন্ড করা হবে দ্বিগুণ এবং সেখানে সে থাকবে স্থায়ীভাবে লাঞ্ছিত অবস্থায়।
25-70 : তবে যারা তওবা করবে, ঈমান আনবে এবং আমলে সালেহ্ করবে, তিনি তাদের পাপ বদল করে দেবেন পুণ্যের মাধ্যমে। আর আল্লাহ্ তো পরম ক্ষমাশীল ও দয়াময় আছেনই।
25-71 : আর যে তওবা করবে এবং আমলে সালেহ্ করবে, সে তো অনুতপ্ত হয়ে পুরোপুরি আল্লাহর অভিমুখীই হবে।
25-72 : তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না। তারা যখন অর্থহীন কার্যকলাপের সম্মুখীন হয়, তখন আত্মমর্যাদা রক্ষা করে চলে যায়।
25-73 : তাদেরকে যখন আল্লাহর আয়াত স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়, তখন তারা অন্ধ ও বধিরের মতো পড়ে থাকে না।
25-74 : তারা দোয়া করে এভাবে: আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানদের আমাদের চক্ষু শীতলকারী বানাও। আর আমাদের বানাও মুত্তাকিদের অগ্রগামী।
25-75 : এদেরই প্রতিদান হবে জান্নাতের বিলাস বহুল কক্ষসমূহ তাদের সবর অবলম্বনের কারণে, আর তাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা দেয়া হবে অভিবাদন এবং সালাম সহকারে।
25-76 : সেখানে থাকবে তারা চিরকাল! কতো যে মনোরম আশ্রয়স্থান ও আবাস।
25-77 : হে নবী! বলো: তোমরা আমার প্রভুকে না ডাকলে তাঁর কিছুই আসে যায় না। তোমরা তো প্রত্যাখ্যানই করেছো, এখন অচিরেই তোমাদের প্রতি নেমে আসবে অপরিহার্য আযাব।