আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 44, আদ্ দুখান (ধোঁয়া) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 44, আদ্ দুখান (ধোঁয়া)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৫৯, রুকু সংখ্যা: ০৩

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০৭কুরআন নাযিলের রাতের মর্যাদা, মহাবিশ্বের প্রভু আল্লাহ্ কুরআন নাযিল করেছেন।
০৮-১৬একদিন মহাকাশ ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। সব মানুষ ধোঁয়ায় ঢাকা পড়বে।
১৭-৩৩ফেরাউনের হাতে বনি ইসরাঈলীদের পরীক্ষা।
৩৪-৫৯পুনরুত্থানকে অস্বীকারকারীদের ভ্রান্তি। পাপিষ্ঠদের পরকালীন খাদ্য হবে যাক্কুম গাছ ও প্রচন্ড গরম পানি। মুত্তাকিদের পরকালীন নিরাপত্তা ও নিয়ামত। কুরআনকে সহজ করা হয়েছে উপদেশ গ্রহণের জন্য।
44-1 : হা মিম।
44-2 : শপথ এই সুস্পষ্ট কিতাবের।
44-3 : আমরা এটিকে নাযিল করেছি এক মুবারক রাতে। আমরা তো সতর্ককারী।
44-4 : সেই রাতে ফায়সালা করা হয় প্রতিটি বিজ্ঞানময় বিষয়
44-5 : আমাদের নির্দেশক্রমে। আমরা তো রসূল পাঠিয়ে থাকি
44-6 : তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে অনুগ্রহ হিসেবে। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
44-7 : তিনি মহাকাশ ও পৃথিবীর প্রভু এবং এ দুয়ের মাঝে যা কিছু আছে সেগুলোরও, যদি তোমরা একীন রেখে থাকো।
44-8 : কোনো ইলাহ্ নেই তিনি ছাড়া। তিনি হায়াত দান করেন এবং মউত ঘটান। তিনিই তোমাদের এবং তোমাদের পূর্ব পুরুষদের প্রভু।
44-9 : বরং তারা সন্দেহে থেকে খেলতামাশায় লিপ্ত হয়েছে।
44-10 : অতএব তুমি অপেক্ষা করো সেই দিনটির যেদিন আসমান হয়ে পড়বে ঘোরতর ধোঁয়াচ্ছন্ন,
44-11 : এবং তা ঢেকে ফেলবে সমস্ত মানুষকেও। এ হবে এক বেদনাদায়ক আযাব।
44-12 : তখন তারা বলতে থাকবে: ‘আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে সরিয়ে নাও আযাব। আমরা এখনই ঈমান আনছি।’
44-13 : কেমন করে তারা গ্রহণ করবে উপদেশ, অথচ তাদের কাছে এসেছিল একজন সুস্পষ্ট রসূল।
44-14 : তখন তারা একথা বলে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়: ‘এ তো এক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাগল।’
44-15 : আমি কিছু কালের জন্যে আযাব সরিয়ে নিচ্ছি, কিন্তু তোমরা তো পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।
44-16 : যেদিন আমরা তোমাদের প্রবলভাবে পাকড়াও করবো, সেদিন অবশ্যি আমরা তোমাদের থেকে প্রতিশোধ নেবো।
44-17 : এদের আগে আমরা ফেরাউনের জাতিকেও পরীক্ষা করেছিলাম এবং তাদের কাছে এসেছিল একজন সম্মানিত রসূল।
44-18 : সে তাদের বলেছিল: ‘‘আল্লাহর বান্দাদের (বনি ইসরাঈলকে) আমার হাতে প্রত্যার্পণ করো। আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রসূল।
44-19 : আল্লাহর বিরুদ্ধে বড়াই করোনা, আমি (আল্লাহর পক্ষ থেকে) তোমাদের কাছে নিয়ে এসেছি সুস্পষ্ট প্রমাণ।
44-20 : তোমরা যেনো আমাকে পাথর মেরে হত্যা করতে না পারো, সে জন্যে আমি আমার প্রভু এবং তোমাদের প্রভু (আল্লাহর) আশ্রয় গ্রহণ করেছি।
44-21 : তোমরা যদি আমার প্রতি ঈমান না আনো, তাহলে আমার থেকে দূরে থাকো।’’
44-22 : অত:পর মূসা তার প্রভুকে ডেকে বললো: ‘এরা তো এক অপরাধী জাতি।’
44-23 : (তখন আমরা তাকে নির্দেশ দিয়েছি:) ‘তুমি রাতের বেলায় আমার দাসদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ো। পেছনে থেকে তোমাদের ধাওয়া করা হবে।’
44-24 : সমুদ্রকে স্থির থাকতে দাও, ওরা সেই বাহিনী যারা ডুবে মরবে।
44-25 : কতো যে বাগবাগিচা আর ঝরণাধারা পেছনে রেখে এসেছিল তারা!
44-26 : রেখে এসেছিল শস্য ক্ষেত, বিলাসবহুল প্রাসাদ,
44-27 : আর কতো যে বিলাস সামগ্রী, যেগুলোতে তারা ছিলো উল্লাসে মত্ত।
44-28 : এমনটিই ঘটেছিল, আর আমরা এসব কিছুর ওয়ারিশ বানিয়েছিলাম অপর একদল লোককে।
44-29 : আসমান কিংবা জমিন কেউই তাদের জন্যে অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের কোনো প্রকার অবকাশও দেয়া হয়নি।
44-30 : (এভাবে) আমরা নাজাত (মুক্তি) দিয়েছিলাম বনি ইসরাঈলকে লাঞ্ছনাকর আযাব থেকে,
44-31 : ফেরাউনের কবল থেকে, সে ছিলো এক উদ্ধত সীমালংঘনকারী।
44-32 : আমরা জেনে বুঝেই জমিনে তাদের দিয়েছিলাম শ্রেষ্ঠত্ব।
44-33 : আর আমরা তাদের দিয়েছিলাম নিদর্শনাবলি, যাতে ছিলো সুস্পষ্ট পরীক্ষা।
44-34 : এখন কিনা এরা বলছে:
44-35 : ‘‘আমাদের প্রথম মউত ছাড়া আর কিছু নেই, আমাদের পুনরুত্থিত করা হবেনা।
44-36 : তোমরা সত্যবাদী হলে আমাদের পূর্ব পুরুষদের উঠিয়ে এনে দেখাও।’’
44-37 : এরাই কি শ্রেষ্ঠ, নাকি তুববা জাতি এবং তাদের আগেকার লোকেরা? আমরা তাদের হালাক (ধ্বংস) করে দিয়েছিলাম, কারণ তারা ছিলো অপরাধী।
44-38 : আমরা মহাকাশ, এই পৃথিবী এবং এদের মধ্যবর্তী সবকিছু খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।
44-39 : আমরা এ দুটো (মহাকাশ ও পৃথিবী) বাস্তব কারণ ছাড়া সৃষ্টি করিনি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানেনা।
44-40 : বিচারের দিনই হলো তাদের মিকাত (শেষ সীমা ও শেষ সময়)।
44-41 : সেদিন বন্ধু বন্ধুর উপকারে আসবেনা এবং সাহায্যও করা হবেনা তাদের।
44-42 : তবে আল্লাহ্ যার প্রতি রহম করবেন, তার কথা ভিন্ন। নিশ্চয়ই তিনি মহাশক্তিধর, পরম করুণাময়।
44-43 : নিশ্চয়ই যাক্কুম গাছ হবে
44-44 : পাপিষ্ঠদের খাদ্য,
44-45 : গলিত তামার মতো ফুটতে থাকবে তাদের পেটে,
44-46 : যেভাবে ফোটে টগবগে ফুটন্ত পানি।
44-47 : (বলা হবে:) ওকে পাকড়াও করো এবং টেনে নিয়ে যাও জাহিমের (জাহান্নামের) মাঝখানে,
44-48 : তারপর তার মাথায় ঢালো টগবগে ফুটন্ত পানির আযাব।
44-49 : (তাকে আরো বলা হবে:) স্বাদ গ্রহণ করো, তুমি ছিলে বড় ইযযতওয়ালা, অভিজাত।
44-50 : এ হলো সেই জিনিস, যে বিষয়ে তোমরা সন্দেহ করতে।
44-51 : নিশ্চয়ই মুত্তাকিরা থাকবে নিরাপদ জায়গায়,
44-52 : উদ্যানরাজি আর ঝরণাধারা সমূহের মাঝে,
44-53 : তারা সেখানে পরবে মিহি ও পুরো রেশমের পোশাক এবং বসবে মুখোমুখি হয়ে।
44-54 : এমনটিই ঘটবে, আর আমরা তাদের সংগিনী হিসেবে তাদের সাথে বিয়ে দেবো বড় চোখওয়ালা নারীদের।
44-55 : সেখানে তারা সব রকমের ফলফলারি আনতে বলবে প্রশান্ত হৃদয়ে।
44-56 : প্রথম যে মৃত্যু হয়েছে তাছাড়া আর কোনো মৃত্যু তারা আস্বাদন করবেনা এবং তাদের রক্ষা করা হবে জাহিমের (জাহান্নামের) আযাব থেকে।
44-57 : এসবই তোমার প্রভুর অনুগ্রহ। এটাই হবে মহাসাফল্য।
44-58 : এই কুরআনকে আমরা তোমার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে করে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
44-59 : অতএব তুমি অপেক্ষা করো, তারাও প্রতীক্ষায়ই আছে।