আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 51, আয্ যারিয়াত (উড়ন্ত অণু বা ধূলা) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 51, আয্ যারিয়াত (উড়ন্ত অণু বা ধূলা)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৬০, রুকু সংখ্যা: ০৩

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-২৩প্রতিদান দিবস অবশ্যই আসবে। সন্দেহ পোষণকারীরা অবশ্যই শাস্তি ভোগ করবে। মহত গুণের অধিকারী মুত্তাকিরা অবশ্যই জান্নাতে যাবে।
২৪-৪৬নবীদের দাওয়াত প্রত্যাখ্যানকারীদের ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
৪৭-৫১আল্লাহ্ মহাকাশের পরিধি বৃদ্ধি করে চলেছেন। প্রতিটি জিনিসকে তিনি সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায় । তাঁর কোনো শরিক নেই।
৫২-৫৫অতীতের সব রসূলকেই ম্যাজিসিয়ান কিংবা পাগল বলা হয়েছে। উপদেশ দিয়ে যাও, উপদেশ মুমিনদের জন্য উপকারি।
৫৬-৬০জিন ও মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে আল্লাহর দাসত্ব করার জন্য। প্রতিশ্রুত দিনটিতে কাফিরদের জন্য হবে ধ্বংস।
51-1 : শপথ অণু ঝড়ের,
51-2 : শপথ ভারি পানি বহনকারী মেঘমালার,
51-3 : শপথ সহজ গতির নৌযানের,
51-4 : শপথ কাজ বণ্টনকারী (ফেরেশতা)দের,
51-5 : তোমাদের যে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা অবশ্য অবশ্যি সত্য।
51-6 : প্রতিফল দিবস অবশ্যি সংঘটিত হবে।
51-7 : শপথ অনেক পথ বিশিষ্ট আসমানের,
51-8 : নিশ্চয়ই তোমরা লিপ্ত (আল্লাহর রসূল ও কুরআন সম্পর্কে) পরস্পর বিরোধী কথাবার্তায়।
51-9 : তা থেকে (কুরআন থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয় তো ঐ ব্যক্তি যে সত্যভ্রষ্ট।
51-10 : মিথ্যাবাদীরা মারা পড়েছে,
51-11 : যারা নিমজ্জিত অজ্ঞতা আর উদাসীনতায়।
51-12 : তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, কবে আসবে প্রতিদান দিবস?
51-13 : সেদিন আসবে প্রতিদান দিবস, যেদিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে জাহান্নামে।
51-14 : তোমরা আস্বাদন করো তোমাদের শাস্তি। এই আযাবই তোমরা দ্রুত চেয়েছিলে।
51-15 : মুত্তাকিরা থাকবে জান্নাতে আর ঝরণা ধারায়,
51-16 : তারা সেখানে উপভোগ করবে তাদের প্রভুর দেয়া নিয়ামতরাজি। কারণ ইতোপূর্বে (পৃথিবীর জীবনে) তারা ছিলো কল্যাণপরায়ণ পুণ্যবান।
51-17 : তারা রাতের সামান্য অংশই ব্যয় করতো নিদ্রায়,
51-18 : শেষ রাতে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করতো,
51-19 : তাদের অর্থ - সম্পদে ছিলো অধিকার সাহায্যপ্রার্থী এবং বঞ্চিতদের।
51-20 : পৃথিবীতেই রয়েছে নিদর্শন বিশ্বাসীদের জন্যে,
51-21 : এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও। তোমরা কি ভেবে দেখবে না?
51-22 : আর তোমাদের জীবিকা রয়েছে আসমানে এবং তোমাদের যা কিছুর ওয়াদা দেয়া হয়েছে সেগুলোও।
51-23 : আকাশ ও পৃথিবীর প্রভুর শপথ, তোমাদের পারস্পরিক কথাবার্তার মতোই এ (কুরআন) এক মহাসত্য।
51-24 : তোমার কাছে কি এসেছে ইবরাহিমের সম্মানিত মেহমানদের ঘটনা?
51-25 : তারা যখন তার ঘরে প্রবেশ করেছিল, বলেছিল: ‘সালাম।’ জবাবে সেও বলেছিল: ‘সালাম।’ সে আরো বলেছিল: আপনারা তো অপরিচিত লোক!’
51-26 : তখন সে তার পরিবারের (স্ত্রীর) কাছে ছুটে গেলো এবং একটি মাংসল গো - বাছুর ভুনা করে নিয়ে এলো।
51-27 : সেটি তাদের কাছে রাখলো। তারপর বললো: ‘আপনারা খাচ্ছেন না যে?’
51-28 : এতে করে তাদের ব্যাপারে তার মনে ভয়ের সঞ্চার হয়। তখন তারা বললো: ‘আপনি ভয় পাবেন না।’ তারা তাকে সুসংবাদ দিলো এক জ্ঞানী পুত্র সন্তানের।
51-29 : তখন তার স্ত্রী চীৎকার করতে করতে সামনে এগিয়ে এলো এবং গাল চাপড়িয়ে বললো: ‘এই বৃদ্ধার সন্তান হবে?’
51-30 : তারা বললো: ‘আপনার প্রভু একথাই বলেছেন, তিনি প্রজ্ঞাবান সর্বজ্ঞানী।’
51-31 : ইবরাহিম বললো: ‘হে প্রেরিত ফেরেশতারা! আপনারা বিশেষ কী দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন?’
51-32 : তারা বললো: ‘‘আমাদের পাঠানো হয়েছে অপরাধী (লুত) সম্প্রদায়ের প্রতি
51-33 : তাদের উপর পোড়া মাটির ঢিল নিক্ষেপ করার জন্যে,
51-34 : সেগুলো সীমালংঘনকারীদের জন্যে চিহ্নিত আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে।
51-35 : সেখানে যারা মুমিন ছিলো তাদেরকে আমরা বের করে এনেছিলাম,
51-36 : আর সেখানে আমরা একটির বেশি মুসলিম পরিবার পাইনি।’’
51-37 : যারা যন্ত্রণাদায়ক আযাবকে ভয় করে, তাদের জন্যে আমরা সেখানে একটি নিদর্শন রেখেছি।
51-38 : নিদর্শন রেখেছি আমরা মূসার ঘটনাতেও, যখন আমরা তাকে পাঠিয়েছিলাম ফেরাউনের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে।
51-39 : তখন সে (ফেরাউন) ক্ষমতার দম্ভে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলেছিল: ‘এতো একজন ম্যাজেসিয়ান, কিংবা পাগল।’
51-40 : ফলে আমরা পাকড়াও করেছিলাম তাকে এবং তার বাহিনীকে এবং তাদের নিক্ষেপ করেছিলাম সমুদ্রে। সে এক তিরস্কারযোগ্য ব্যক্তি।
51-41 : নিদর্শন রয়েছে আদ সম্প্রদায়ের ঘটনাতেও। আমরা তাদের উপর পাঠিয়েছিলাম এক বন্ধ্যা ঝড়।
51-42 : তা যা কিছুর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল, সবই ধূলিস্যাত করে দিয়েছিল।
51-43 : সামুদ সম্প্রদায়ের ঘটনাতেও রয়েছে নিদর্শন। তাদের বলা হয়েছিল: ‘সামান্য ক’দিন ভোগ করে নাও।’
51-44 : কিন্তু তারা অমান্য করে তাদের প্রভুর নির্দেশ। ফলে তাদের পাকড়াও করে প্রচন্ড বজ্রাঘাত এবং তারা তা দেখছিল।
51-45 : তারা উঠেও দাঁড়াতে পারেনি এবং প্রতিরোধও করতে পারেনি।
51-46 : আরো আগে আমরা ধ্বংস করে দিয়েছিলাম নূহের জাতিকেও। তারা ছিলো এক ফাসিক (সীমালংঘনকারী সত্যত্যাগী) জাতি।
51-47 : আমরা আকাশ বানিয়েছি শক্ত হাতে এবং নিশ্চয়ই আমরা এর বিস্তৃতি সম্প্রসারণ করতে সক্ষম।
51-48 : আর পৃথিবীকে আমরা বিছিয়ে দিয়েছি, কতো যে উত্তম প্রসারণকারী আমরা!
51-49 : প্রতিটি বস্ত্তকে আমরা সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়, যাতে করে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো।
51-50 : অতএব তোমরা দৌড়াও আল্লাহর দিকে, আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
51-51 : তোমরা আল্লাহর সাথে অপর কোনো ইলাহ্ সাব্যস্ত করোনা। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্যে এক সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
51-52 : এভাবে তাদের আগেকার লোকদের কাছেও যখনই কোনো রসূল এসেছিল, তারা তাকে বলেছিল: ‘তুমি একজন ম্যাজেসিয়ান কিংবা পাগল।’
51-53 : তারা কি একে অপরকে (ধারাবাহিকভাবে) এই অসিয়তই করে আসছে? আসলে তারা একটি সীমালংঘনকারী কওম।
51-54 : সুতরাং তুমি তাদের উপেক্ষা করো। এর জন্যে তুমি তিরস্কৃত হবেনা।
51-55 : তুমি উপদেশ দিতে থাকো। কারণ, উপদেশ মুমিনদের উপকারে আসে।
51-56 : আমরা জিন এবং ইনসানকে এজন্যেই সৃষ্টি করেছি যে, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে।
51-57 : আমি তো তাদের কাছে রিযিক চাইনা এবং এটাও চাইনা যে, তারা আমাকে খাবার খাওয়াবে।
51-58 : নিশ্চয়ই রাজজাক (রিযিক সরবরাহকারী) তো হলেন আল্লাহ্ এবং তিনি মহাশক্তিধর, প্রবল পরাক্রান্ত।
51-59 : যালিমদের ভাগ্যে তাই রয়েছে, অতীতে তাদের সমমতের লোকেরা যা ভোগ করেছিল। ফলে তারা যেনো তাড়াহুড়া না করে।
51-60 : কাফিরদের জন্যে রয়েছে সেই দিনের দুর্ভোগ, যার ওয়াদা তাদের দেয়া হয়েছে।