আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 65, আত্ তালাক (বিবাহ বিচ্ছেদ) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 65, আত্ তালাক (বিবাহ বিচ্ছেদ)



মদিনায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ১২, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০৩তালাক দেয়ার এবং স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার পদ্ধতি।
০৪-০৭কার ইদ্দতকাল কতদিন? ইদ্দতকালে তালাকপ্রাপ্তা তার স্বামীর বাড়িতেই থাকবে। ইদ্দতকালে ভরণপোষণ। তালাকপ্রাপ্তা কর্তৃক তালাকদাতার সন্তান পালন পদ্ধতি।
০৮-১২অতীতে যারা রসূলকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তাদের পরিণতি। মুমিন বুদ্ধিজীবীদের কর্তব্য। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান।
65-1 : হে নবী! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দেয়ার উদ্যোগ নাও, তখন তাদের তালাক দেবে ইদ্দত পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে এবং ইদ্দতের হিসাব রাখবে। তোমাদের প্রভু আল্লাহকে ভয় করবে। তাদের বের করে দিয়োনা তাদের ঘর থেকে এবং তারা নিজেরাও যেনো বের হয়ে না যায়। তবে যদি তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। এগুলো আল্লাহর হুদুদ (আইন)। যে কেউ লংঘন করবে আল্লাহর হুদুদ, সে নিজের প্রতিই যুলুম করবে। তুমি জানোনা, হয়তো এরপর আল্লাহ্ বের করে দেবেন কোনো উপায়।
65-2 : যখন তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ হয়ে আসবে, তখন তোমরা হয় প্রচলিত উত্তম পন্থায় তাদের রেখে দেবে, নতুবা প্রচলিত উত্তম পন্থায় তাদের বিদায় করে দেবে। আর এ সময় তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিকে সাক্ষী রাখবে এবং তোমরা আল্লাহর জন্যে সঠিক সাক্ষ্য দেবে। এর মাধ্যমে উপদেশ দেয়া হচ্ছে তোমাদের যারা আল্লাহ্ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, তাদেরকে। যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার জন্যে বের হবার পথ খোলাসা করে দেবেন,
65-3 : এবং তাকে রিযিক দেবেন এমন উৎস থেকে যা সে ধারণাই করেনি। যে কেউ তাওয়াক্কুল করবে আল্লাহর উপর, তিনিই তার জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহ্ তাঁর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেনই। তিনি প্রতিটি বস্ত্তর জন্যে নির্ধারণ করেছেন পরিমাণ ও মাত্রা।
65-4 : তোমাদের যেসব স্ত্রী মাসিক স্রাব হওয়ার ব্যাপারে নিরাশ হয়েছে, তাদের ইদ্দতকাল সম্পর্কে তোমাদের সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দতকাল তিন মাস। আর যাদের এখনো মাসিক হতে শুরুই করেনি, তাদের ইদ্দতকালও অনুরূপ (তিন মাস)। আর গর্ভবতীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ্ তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন।
65-5 : এ হলো আল্লাহর বিধান, তিনি তা নাযিল করেছেন তোমাদের প্রতি। যে আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ্ তার পাপ মুছে দেবেন এবং বড় করে দেবেন তার পুরস্কার।
65-6 : তোমরা তোমাদের সামর্থ অনুযায়ী যে ধরণের ঘরে বাস করো, তাদেরকেও সে ধরণের ঘরে বাস করতে দেবে। তাদের উত্যক্ত করোনা তাদেরকে সংকটে ফেলার উদ্দেশ্যে। তারা গর্ভবতী হয়ে থাকলে সন্তান প্রসব পর্যন্ত তাদের নফকা (খোরপোষ) দাও। যদি তারা তোমাদের সন্তানদের বুকের দুধ পান করায়, তবে তাদের পারিশ্রমিক দেবে এবং সন্তানের কল্যাণ সম্পর্কে তোমরা প্রচলিত উত্তম পন্থায় নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করবে। কিন্তু তোমরা যদি নিজ নিজ দাবিতে অনমনীয় হও, তাহলে তার পক্ষে অন্য নারী বুকের দুধ পান করাবে।
65-7 : সামর্থবানরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী নফকা দেবে, আর যার জীবিকা সীমিত, সে ব্যয় করবে আল্লাহ্ যা দিয়েছেন তা থেকেই। আল্লাহ্ যা দান করেছেন তার চেয়ে বেশি বোঝা তিনি কোনো ব্যক্তির উপর চাপান না। আল্লাহ্ কাঠিন্যের পর সহজতা দান করেন।
65-8 : কতো যে জনপদ তাদের প্রভুর এবং তাঁর রসূলের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেছে, ফলে আমরা তাদের থেকে নিয়েছি কঠোর হিসাব এবং তাদের আযাব দিয়েছি এক দুঃসহ আযাব।
65-9 : তারা তাদের কার্যকলাপের পরিণতির স্বাদ গ্রহণ করেছে আর তাদের কার্যকলাপের পরিণতি ছিলো ক্ষতিকর।
65-10 : আল্লাহ্ তাদের জন্যে প্রস্ত্তত রেখেছেন কঠোর শাস্তি। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো হে বুঝ - বুদ্ধিওয়ালা লোকেরা, যারা ঈমান এনেছো। আল্লাহ্ তো নাযিল করেছেন তোমাদের প্রতি একটি যিকির (আল কুরআন)
65-11 : (এবং) একজন রসূল, যে তিলাওয়াত করে তোমাদের প্রতি আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত, যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে সালেহ্ করেছে তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনার জন্যে। যে কেউ ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি এবং আমলে সালেহ্ করবে, তাকে তিনি দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিচে দিয়ে বহমান থাকবে নদ নদী নহর। সেখানে থাকবে তারা চিরকাল স্থায়ীভাবে। আল্লাহ্ তাকে প্রদান করবেন উত্তম জীবিকা।
65-12 : আল্লাহ্ই তো সৃষ্টি করেছেন সাত আকাশ, পৃথিবী ও অনুরূপ। সেগুলোর মাঝে নাযিল করা হয় তাঁর নির্দেশ, যাতে করে তোমরা বুঝতে পারো আল্লাহ্ প্রতিটি বিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং আল্লাহ্ প্রতিটি বস্ত্তকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন তাঁর জ্ঞান দিয়ে।