আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 66, আত্ তাহরিম (হারাম বা নিষিদ্ধ করা) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 66, আত্ তাহরিম (হারাম বা নিষিদ্ধ করা)



মদিনায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ১২, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০২হালালকে হারাম করার অধিকার নবীর নেই। শপথের বিধান।
০৩-০৫নবীর স্ত্রীদের প্রতি উপদেশ।
০৬-০৮মুমিনদের প্রতি উপদেশ।
০৯-১২নবীর প্রতি কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ। কাফিরদের জন্যে উপমা নূহ ও লুতের স্ত্রী। মুমিনদের জন্যে উপমা ফিরাউনের স্ত্রী ও মরিয়ম।
66-1 : হে নবী! আল্লাহ্ তোমার জন্যে যা হালাল করেছেন, তুমি কেন তা হারাম করছো? তুমি কি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি চাইছো। আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল দয়াবান।
66-2 : আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে কসম থেকে মুক্তি লাভের বিধান দিয়েছেন, কারণ তিনি তোমাদের মাওলা (অভিভাক) এবং তিনি মহাজ্ঞানী, মহাপ্রজ্ঞাবান।
66-3 : স্মরণ করো, নবী তার কোনো একজন স্ত্রীকে গোপনে একটি কথা বলেছিল। তার সে (স্ত্রী) যখন তা অন্যজনকে বলে দিয়েছিল এবং আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তখন নবী এ বিষয়ে কিছু কথা ব্যক্ত করলো আর কিছু ব্যক্ত করতে উপেক্ষা করলো। নবী যখন তা তাঁর সেই স্ত্রীকে জানালো, তখন সে বললো: ‘কে আপনাকে এটা অবহিত করেছে?’ সে বললো: ‘আমাকে তা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, যিনি সর্বজ্ঞানী এবং সব বিষয়ে অবহিত।’
66-4 : যদি তোমরা দুজনেই (নবীর সেই দুই স্ত্রী) আল্লাহর দিকে তওবা করে (অনুতপ্ত হয়ে) ফিরে আসো তবে ভালো, কারণ তোমাদের অন্তর তো ঝুঁকে পড়েছে। কিন্তু তোমরা যদি নবীর বিরুদ্ধে পরস্পরকে সহযোগিতা করো, তবে জেনে রাখো, আল্লাহ্ তার (নবীর) মাওলা এবং জিবরিল আর পুণ্যবান মুমিনরাও তার সাহায্যকারী। তাছাড়া ফেরেশতারা তো তার সাহায্যকারী আছেই।
66-5 : নবী যদি তোমাদের সবাইকে তালাক দিয়ে দেয়, তবে তার প্রভু অবশ্যি তোমাদের বদলে তাকে দেবেন তোমাদের চাইতেও উত্তম স্ত্রী, যারা হবে আত্মসমর্পিত, মুমিনা, অনুগত, তাওবাকারী, ইবাদতকারী, সিয়াম পালনকারী, অকুমারী এবং কুমারী।
66-6 : হে ঈমানদার লোকেরা ! তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবারবর্গকে রক্ষা করো জাহান্নাম থেকে, যার জ্বালানি হবে মানুষ আর পাথর (ভাষ্কর্য, মূর্তি), তার তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রয়েছে এমন সব ফেরেশতা, যারা শক্ত হৃদয় আর কঠোর স্বভাবের। তারা অমান্য করেনা তাদেরকে যা নির্দেশ দেয়া হয়। যা নির্দেশ দেয়া হয় তারা তাই করে।
66-7 : হে কাফিররা! তোমরা আজ কোনো ওযর পেশ করোনা। অবশ্যি আজ তোমাদের প্রতিফল দেয়া হবে তোমাদের কাজ অনুযায়ী।
66-8 : হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা তওবা করো (অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসো) আল্লাহর দিকে শুদ্ধ একনিষ্ঠ তওবা। তাহলে অবশ্যি তোমাদের প্রভু তোমাদের থেকে মুছে দেবেন তোমাদের পাপসমূহ এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিচে দিয়ে বহমান থাকবে নদ নদী নহর। সেদিন আল্লাহ্ অপমানিত করবেন না তাঁর নবীকে এবং তাঁর সাথে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে। তাদের নূর সায়ী করবে (দৌড়াবে) তাদের সামনে দিয়ে এবং ডানে দিয়ে। তারা বলবে, আমাদের প্রভু! আমাদের জন্যে পূর্ণ করে দাও (জান্নাতে পৌঁছা পর্যন্ত) আমাদের নূর এবং ক্ষমা করে দাও আমাদের। নিশ্চয়ই তুমি প্রতিটি বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
66-9 : হে নবী! জিহাদ করো কাফির এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে এবং কঠোর হও তাদের প্রতি। তাদের আশ্রয় হবে জাহান্নাম এবং সেটা কতো যে নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনের জায়গা!
66-10 : আল্লাহ্ কাফিরদের জন্যে মেছাল (দৃষ্টান্ত) দিচ্ছেন নূহের স্ত্রীর এবং লুতের স্ত্রীর। তারা ছিলো আমার দুই পুণ্যবান দাসের বিবাহাধীন। কিন্তু দুজনই তাদের প্রতি করেছিল খিয়ানত। ফলে নূহ এবং লুত তাদেরকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারেনি এবং তাদের বলা হয়েছিল: প্রবেশকারীদের সাথে দাখিল হয়ে যাও জাহান্নামে।
66-11 : আল্লাহ্ মুমিনদের জন্যে মেছাল দিচ্ছেন ফেরাউনের স্ত্রীর। সে ফরিয়াদ করেছিল: ‘আমার প্রভু! তোমার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে বানাও একটি ঘর, আর আমাকে নাজাত দাও ফেরাউনের কবল থেকে এবং তার দুষ্কর্ম থেকে, আর আমাকে নাজাত দাও যালিম কওমের কবল থেকে।’
66-12 : তিনি তাদের জন্যে আরো মেছাল দিচ্ছেন ইমরানের কন্যা মরিয়মের, যে রক্ষা করেছিল নিজের সতীত্ব। ফলে আমরা তার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছিলাম আমাদের রূহ থেকে। সে তার প্রভুর বাণী এবং তাঁর কিতাবকে সত্যায়ন করেছিল এবং সে ছিলো অনুগতদের একজন।