আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 67, আল মুলক (সর্বময় কর্তৃত্ব) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 67, আল মুলক (সর্বময় কর্তৃত্ব)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৩০, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১২সর্বময় কর্তৃত্ব আল্লাহর। আল্লাহর সৃষ্টি নিখুঁত। আল্লাহর প্রভুত্ব অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে কঠোর আযাব। যারা আল্লাহর প্রভুত্ব স্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
১৩-২৪আল্লাহর একত্ব ও প্রভুত্বের যুক্তি ও প্রমাণ।
২৫-২৬পুনরুত্থান ও বিচার অনিবার্য।
২৭-৩০আল্লাহর একত্বের যুক্তি।
67-1 : মহা বরকতময় সেই সত্তা, সর্বময় কর্তৃত্ব যাঁর হাতে। আর সব কিছুর উপর তিনি সর্বশক্তিমান।
67-2 : তিনি সেই মহান সত্তা, যিনি সৃষ্টি করেছেন মউত এবং হায়াত তোমাদের এই পরীক্ষা করার জন্যে যে, তোমাদের মাঝে আমলের দিক দিয়ে কে উত্তম? তিনি মহাশক্তিমান, অতীব ক্ষমাশীল,
67-3 : যিনি সৃষ্টি করেছেন তবকায় তবকায় সাত আস্মান। দয়াময় - রহমানের সৃষ্টিতে কোনো খুঁত তুমি দেখতে পাবেনা। আবার তাকিয়ে দেখো, দেখতে পাও কি কোনো খুঁত?
67-4 : তারপর বার বার নজর করে দেখো, সেই নজর ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে তোমার দিকে।
67-5 : আমরা দুনিয়ার আসমানকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছি অনেক প্রদীপ দিয়ে এবং সেগুলোকে বানিয়েছি শয়তানদের দিকে নিক্ষেপের হাতিয়ার, আর তাদের জন্যে তৈরি করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আযাব।
67-6 : যারা তাদের প্রভুর প্রতি কুফুরি করে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আযাব; আর তা ফিরে যাবার কতো যে মন্দ জায়গা!
67-7 : তাদেরকে যখন তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তারা তখন শুনতে পাবে তার উত্থান পতনের বিকট শব্দ।
67-8 : যেনো সে (জাহান্নাম) ক্রোধে ফেটে পড়বে। যখনই তাতে নিক্ষেপ করা হবে কোনো দলকে, তখনই তার রক্ষীরা তাদের প্রশ্ন করবে: তোমাদের কাছে কি আসেনি কোনো সতর্ককারী?
67-9 : তারা বলবে: ‘হ্যাঁ, আমাদের কাছে একজন সতর্ককারী এসেছিল, কিন্তু আমরা প্রত্যাখ্যান করেছিলাম তাকে। আমরা বলেছিলাম: আল্লাহ কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা মহাভুল পথে আছো।’
67-10 : তারা আরো বলবে: ‘আমরা যদি (তাদের আহবান - উপদেশ) শুনতাম এবং আকল খাটাতাম, তাহলে আজ আমরা সায়ীরের (জাহান্নামের) অধিবাসী হতাম না।’
67-11 : এভাবেই তারা স্বীকার করবে তাদের অপরাধ। ধ্বংস সায়ীরের অধিবাসীদের জন্যে।
67-12 : নিশ্চয়ই যারা না দেখেও তাদের প্রভুকে ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মাগফিরাত আর মহাপুরস্কার।
67-13 : তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বলো, কিংবা প্রকাশ্যে, নিশ্চয়ই তিনি বিশেষভাবে জ্ঞাত অন্তরের খবর।
67-14 : যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানবেন না? অথচ তিনি হলেন সুক্ষ্মদর্শী, সব অবগত।
67-15 : তিনিই সেই সত্তা, যিনি এই পৃথিবীকে তোমাদের জন্যে বানিয়ে দিয়েছেন চলাচলের উপযোগী, সুতরাং তোমরা দিক দিগন্তে চলাচল করো এবং তাঁর দেয়া জীবিকা থেকে খাও। আর তাঁরই কাছে হবে হাশর - নশর।
67-16 : যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের নিয়ে পৃথিবীকে ধসিয়ে দেবেন আর তা আকস্মিক থর থর করে কেঁপে উঠবে - এ থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছো?
67-17 : নাকি আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদের উপর কংকরবর্ষী তুফান পাঠাবেন - সে ব্যাপারে তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছো? অচিরেই জানতে পারবে কেমন ছিলো সতর্কবাণী।
67-18 : এদের পূর্বের লোকেরাও প্রত্যাখ্যান করেছিল। ফলে তাদের শাস্তিটাও হয়েছিল কেমন (কঠোর)?
67-19 : তারা কি তাদের উপরে পাখিদের প্রতি লক্ষ্য করেনা? তারা ডানা বিস্তার করে আবার গুটিয়ে নেয়। দয়াময় - রহমানই তাদের স্থির রাখেন। নিশ্চয়ই তিনি প্রতিটি বিষয়ে দৃষ্টিবান।
67-20 : দয়াময় - রহমান ছাড়া তোমাদের কোনো সেনাবাহিনী আছে কি, যারা তাঁর বিরুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করবে? আসলে কাফিররা রয়েছে প্রতারণার মধ্যে।
67-21 : এমন কে আছে যে তোমাদের রিযিক সরবরাহ করবে - যদি তিনি তাঁর রিযিক (সরবরাহ) বন্ধ করে দেন? বরং তারা অবাধ্যতা ও সত্য থেকে পালানোর উপর অবিচল রয়েছে।
67-22 : যে ব্যক্তি ঝুঁকে মুখের উপর ভর দিয়ে চলে সে - ই কি ঠিক পথে চলে, নাকি ঐ ব্যক্তি, যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?
67-23 : হে নবী! বলো: ‘তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়। তবে তোমরা খুব কমই শোকর আদায় করে থাকো।’
67-24 : হে নবী! বলো: ‘তিনিই তোমাদের পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাঁরই কাছে করা হবে তোমাদের হাশর (একত্র)’।
67-25 : তারা বলে: ‘তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকলে বলো কখন আসবে এই ওয়াদা করা সময়টি?’
67-26 : হে নবী! তুমি বলো: ‘এর এলেম আল্লাহর কাছেই রয়েছে। আমি তো একজন স্পষ্ট সাবধানকারী মাত্র।’
67-27 : তারা যখন দেখবে তা (কিয়ামত) সম্মুখে উপস্থিত, তখন চেহারা ম্লান হয়ে যাবে কাফিরদের। তাদের বলা হবে: ‘এটাই সেই জিনিস যা তোমরা দাবি করে আসছিলে।
67-28 : হে নবী ! তাদের বলো: তোমরা কি চিন্তা করে দেখেছো, আল্লাহ যদি আমাকে এবং আমার সাথিদেরকে হালাক করে দেন, অথবা আমাদের প্রতি রহম করেন, কিন্তু কাফিরদের রক্ষা করবে কে বেদনাদায়ক আযাব থেকে?
67-29 : বলো: ‘তিনি দয়াময় - রহমান, আমরা তাঁরই প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে, কে নিমজ্জিত স্পষ্ট গোমরাহিতে?
67-30 : হে নবী! তাদের জিজ্ঞেস করো: ‘তোমরা কি চিন্তা করে দেখছো, ভূ - গর্ভের পানি যদি তোমাদের নাগালের বাইরে চলে যায়, তখন কে এনে দেবে তোমাদের বহমান পানি?’