আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 68, আল কলম (কলম) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 68, আল কলম (কলম)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা : ৫২, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০৭মুহাম্মদ সত্য রসূল।
০৮-৩৩পাপিষ্ঠদের আনুগত্য করার নিষেধাজ্ঞা। বাগানের মালিকদের উপমা।
৩৪-৫০অনুগতরা আর অপরাধীরা এক নয়। অস্বীকারকারীদের প্রতি সতর্কবাণী। রসূলকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ।
৫১-৫২কুরআন প্রত্যাখ্যানকারীদের দাম্ভিকতা। কুরআন বিশ্ববাসীর জন্যে উপদেশ।
68-1 : নূন! কলমের শপথ আর শপথ সেগুলোর যা তারা (ফেরেশ্তারা) ছত্রে ছত্রে লিপিবদ্ধ করে।
68-2 : তোমার প্রভুর অনুগ্রহে তুমি পাগল নও।
68-3 : অবশ্যি তোমার জন্যে রয়েছে পুরস্কার অফুরান।
68-4 : অবশ্যি তুমি এক মহান চরিত্রের অধিকারী।
68-5 : অচিরেই তুমি দেখবে, আর দেখবে তারাও,
68-6 : তোমাদের মধ্যে কে আপতিত ফিতনায়?
68-7 : তোমার প্রভুই সেই সত্তা, যিনি সর্বাধিক জানেন কারা তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত এবং তিনিই তাদের সর্বাধিক জানেন, যারা হিদায়াত প্রাপ্ত।
68-8 : সুতরাং তুমি মিথ্যাবাদীদের আনুগত্য করোনা।
68-9 : তারা চায়, তুমি যদি নমনীয় হও, তবেই তারা নমনীয় হবে।
68-10 : তুমি আনুগত্য করোনা বারবার হলফকারী হীন ব্যক্তির,
68-11 : যে পেছনে নিন্দা করে এবং একজনের কথা আরেকজনের কাছে লাগিয়ে বেড়ায়।
68-12 : সে ভালো কাজে বাধাদানকারী, সীমালংঘনকারী, পাপিষ্ঠ।
68-13 : সে কর্কশ স্বভাবের, তারপর কুখ্যাত।
68-14 : এর কারণ, তার অনেক মাল সম্পদ আছে এবং আছে অনেক সন্তান সন্ততি।
68-15 : তার কাছে যখন আমাদের আয়াত তিলাওয়াত করা হয়, সে বলে: ‘এগুলো তো সেকালের কাহিনী।’
68-16 : অচিরেই আমরা দাগ লাগিয়ে দেবো তার শুঁড়ে (নাকে)।
68-17 : আমরা তাদের পরীক্ষা করেছি, যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম বাগানওয়ালাদের, যখন তারা কসম খেয়ে বলেছিল তারা সকালে বাগানের ফল পাড়বে,
68-18 : তারা ইনশাল্লাহ (আল্লাহ চাহেন তো) বলেনি।
68-19 : তারপর তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে সেই বাগানের উপর দিয়ে বয়ে গেলো একটি ঝাপটা। তখন তারা ছিলো ঘুমে।
68-20 : ফলে সেই বাগান হয়ে যায় কালো বর্ণ (কয়লার মতো)।
68-21 : ভোরে তারা পরস্পরকে ডাকলো (বললো:)
68-22 : ‘যদি তোমরা সকাল সকাল ফল পাড়তে চাও, তবে সকাল সকাল বাগানে চলো।’
68-23 : তারপর তারা (বাগানের দিকে) চললো নিচু স্বরে (এই) কথা বলতে বলতে:
68-24 : আজ যেনো তোমাদের কাছে বাগানে দাখিল না হয় কোনো মিসকিন (অভাবী)।
68-25 : আর তারা ভোরে ভোরেই বাগানে রওয়ানা করলো (মিসকিন) প্রতিরোধ করতে সক্ষম মনে করে।
68-26 : তারপর যখন বাগানের অবস্থা দেখলো, বললো: ‘‘আমরা তো বিভ্রান্ত হয়ে পড়লাম।
68-27 : বরং আমরা বঞ্চিত হয়ে গেছি।’’
68-28 : তাদের সবচে’ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি বললো: ‘আমি কি তোমাদের বলিনি, কেন তোমরা তসবিহ করছোনা?
68-29 : (তারা বললো:) আমাদের প্রভুর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, অবশ্যি আমরা ছিলাম যালিম।
68-30 : তখন তারা পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করতে থাকলো।
68-31 : তারা বললো: ‘‘হায় ধ্বংস আমাদের, অবশ্যি আমরা ছিলাম সীমালংঘনকারী।
68-32 : হয়তো আমাদের প্রভু আমাদেরকে এর চাইতে উত্তম বদলা (বিনিময়) দেবেন, আমরা আমাদের প্রভুর অভিমুখী হলাম।’’
68-33 : আযাব এরকমই হয়ে থাকে। আর আখিরাতের আযাব অবশ্যি এর চাইতে অনেক জঘন্যতর, যদি তারা জানতো!
68-34 : নিশ্চয়ই মুত্তাকিদের জন্যে তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে ‘জান্নাতুন নায়ীম’।
68-35 : আমরা কি আত্মসমর্পণকারী - মুসলিমদের গণ্য করবো অপরাধীদের সমতুল্য?
68-36 : তোমাদের কী হয়েছে - তোমরা কিভাবে ফায়সালা করছো?
68-37 : নাকি তোমাদের কাছে কোনো কিতাব রয়েছে যার মধ্যে (এসব) তোমরা পাঠ করছো?
68-38 : তাতে কি লেখা রয়েছে তোমাদের পছন্দসই কথা?
68-39 : নাকি আমার সাথে তোমাদের কোনো অংগীকার আছে যা কিয়ামতকাল পর্যন্ত বলবত থাকবে? নিশ্চয়ই তোমরা তাই পাবে, যা নিজেদের জন্যে ফায়সালা করবে।
68-40 : তাদের তুমি প্রশ্ন করো, এ ব্যাপারে তাদের যিম্মাদার কে?
68-41 : নাকি তাদের শরিক করা (দেব দেবী) আছে? তবে তারা সেই শরিকদের নিয়ে আসুক যদি তারা হয়ে থাকে সত্যবাদী।
68-42 : স্মরণ করো, যেদিন তাদের পায়ের নলা উন্মোচিত করা হবে এবং তাদের ডাকা হবে সাজদা করতে, কিন্তু তাদের তা করার শক্তি থাকবেনা।
68-43 : তাদের দৃষ্টি থাকবে অবনত, তাদের গ্রাস করে নেবে যিল্লতি। অথচ (পৃথিবীতে) যখন তাদের সাজদা করতে ডাকা হতো তখন তারা নিজেদের (তা থেকে) রাখতো দূরে।
68-44 : আমাকে ছেড়ে দাও আর যারা এই বাণীকে (আল কুরআনকে) অস্বীকার করে তাদেরকে। আমরা ক্রমান্বয়ে তাদেরকে এমনভাবে ধরবো যে, তারা জানতেও পারবেনা।
68-45 : আমি তাদের অবকাশ দিই, আমার কৌশল মজবুত।
68-46 : তুমি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চাইছো আর তারা সেটাকে মনে করছে দুর্বহ বোঝা?
68-47 : নাকি তাদের কাছে গায়েবের জ্ঞান আছে আর তারা তা লিখে রাখছে?
68-48 : তোমার প্রভুর হুকুমের অপেক্ষায় সবর করো, মাছওয়ালার (ইউনুসের) মতো (অধৈর্য) হয়োনা। সে চরম হতাশায় আচ্ছন্ন অবস্থায় (আমাকে বিনীতভাবে) ডেকেছিল।
68-49 : তার প্রভুর অনুগ্রহ তার কাছে না পৌঁছুলে সে চরম লাঞ্ছিত অবস্থায় নিক্ষিপ্ত হতো উন্মুক্ত প্রান্তরে।
68-50 : তারপর তার প্রভু তাকে মনোনীত করলেন এবং তাকে তাঁর সালেহ্ বান্দাদের অন্তরভুক্ত করলেন।
68-51 : কাফিররা যখন আয যিক্র (আল কুরআন) শুনে, তখন যেনো তারা তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছাড় মারবে। তারা বলে: ‘এতো এক পাগল।’
68-52 : অথচ এ (কুরআন) তো জগতবাসীর জন্যে এক (কল্যাণময়) উপদেশ ছাড়া আর কিছুই নয়।