আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, Chapter: 44, আল দোখান - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10040

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন

Chapter: 44, আল দোখান

44-1 : হা - মীম।
44-2 : শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।
44-3 : আমি তো ইহা অবতীর্ণ করিয়াছি এক মুবারক রজনীতে ; আমি তো সতর্ককারী।
44-4 : এই রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়,
44-5 : আমার আদেশক্রমে, আমি তো রাসূল প্রেরণ করিয়া থাকি
44-6 : তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহস্বরূপ ; তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ -
44-7 : যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও উহাদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
44-8 : তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই, তিনি জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান; তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও প্রতিপালক।
44-9 : বস্তুত উহারা সন্দেহের বশবর্তী হইয়া হাসিঠাট্টা করিতেছে।
44-10 : অতএব তুমি অপেক্ষা কর সেই দিনের যেদিন স্পষ্ট ধূম্রাচ্ছন্ন হইবে আকাশ,
44-11 : এবং উহা আবৃত করিয়া ফেলিবে মানব জাতিকে। ইহা হইবে মর্মন্তুদ শাস্তি।
44-12 : তখন উহারা বলিবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের হইতে শাস্তি দূর কর, অবশ্যই আমরা ঈমান আনিব।’
44-13 : উহারা কী করিয়া উপদেশ গ্রহণ করিবে? উহাদের নিকট তো আসিয়াছে স্পষ্ট ব্যাখ্যাতা এক রাসূল ;
44-14 : অতঃপর উহারা তাহাকে অমান্য করিয়া বলে, ‘সে শিক্ষাপ্রাপ্ত এক পাগল!’
44-15 : আমি কিছু কালের জন্য শাস্তি রহিত করিব - তোমরা তো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়া যাইবে।
44-16 : যেদিন আমি তোমাদেরকে প্রবলভাবে পাকড়াও করিব, সেদিন নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে শাস্তি দিবই।
44-17 : ইহাদের পূর্বে আমি তো ফির‘আওন সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করিয়াছিলাম এবং উহাদের নিকটও আসিয়াছিল এক সম্মানিত রাসূল,
44-18 : সে বলিল, আল্লাহ্‌র বান্দাদেরকে আমার নিকট প্রত্যর্পণ কর। আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।
44-19 : ‘এবং তোমরা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করিও না, আমি তোমাদের নিকট উপস্থিত করিতেছি স্পষ্ট প্রমাণ।
44-20 : ‘তোমরা যাহাতে আমাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করিতে না পার, তজ্জন্য আমি আমার প্রতিপালক ও তোমাদের প্রতিপালকের শরণ লইতেছি।
44-21 : ‘যদি তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না কর, তবে তোমরা আমার নিকট হইতে দূরে থাক।’
44-22 : অতঃপর মূসা তাহার প্রতিপালকের নিকট নিবেদন করিল, ‘ইহারা তো এক অপরাধী সম্প্রদায়।’
44-23 : আমি বলিয়াছিলাম, ‘তুমি আমার বান্দাদেরকে লইয়া রজনীযোগে বাহির হইয়া পড়, তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হইবেই।’
44-24 : সমুদ্রকে স্থির থাকিতে দাও, উহারা এমন এক বাহিনী যাহা নিমজ্জিত হইবেই।
44-25 : উহারা পশ্চাতে রাখিয়া গিয়াছিল কত উদ্যান ও প্রস্রবণ;
44-26 : কত শস্যক্ষেত্র ও সুরম্য প্রাসাদ,
44-27 : কত বিলাস - উপকরণ, উহাতে তাহারা আনন্দ পাইত!
44-28 : এইরূপই ঘটিয়াছিল এবং আমি এই সমুদয়ের উত্তরাধিকারী করিয়াছিলাম ভিন্ন সম্প্রদায়কে।
44-29 : আকাশ এবং পৃথিবী কেহই উহাদের জন্যে অশ্রুপাত করে নাই এবং উহাদেরকে অবকাশও দেওয়া হয় নাই।
44-30 : আমি তো উদ্ধার করিয়াছিলাম বনী ইসরাঈলকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি হইতে
44-31 : ফির‘আওনের; সে তো ছিল পরাক্রান্ত সীমালংঘনকারীদের মধ্যে।
44-32 : আমি তো জানিয়া - শুনিয়াই উহাদেরকে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছিলাম,
44-33 : এবং উহাদেরকে দিয়াছিলাম নিদর্শনাবলী, যাহাতে ছিল সুস্পষ্ট পরীক্ষা;
44-34 : উহারা বলিয়াই থাকে,
44-35 : ‘আমাদের প্রথম মৃত্যু ব্যতীত আর কিছুই নাই এবং আমরা আর উত্থিত হইব না।
44-36 : ‘অতএব তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে উপস্থিত কর।’
44-37 : শ্রেষ্ঠ কি উহারা, না তুব্বা সম্প্রদায় ও ইহাদের পূর্ববর্তীরা? আমি উহাদেরকে ধ্বংস করিয়াছিলাম, অবশ্যই উহারা ছিল অপরাধী।
44-38 : আমি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং উহাদের মধ্যে কোন কিছুই ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করি নাই;
44-39 : আমি এই দুইটি অযথা সৃষ্টি করি নাই, কিন্তু উহাদের অধিকাংশই ইহা জানে না।
44-40 : নিশ্চয় সকলের জন্য নির্ধারিত রহিয়াছে উহাদের বিচার দিবস।
44-41 : সেদিন এক বন্ধু অপর বন্ধুর কোন কাজে আসিবে না এবং উহারা সাহায্যও পাইবে না।
44-42 : তবে আল্লাহ্‌ যাহার প্রতি দয়া করেন তাহার কথা স্বতন্ত্র। তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
44-43 : নিশ্চয়ই যাক্কুম বৃক্ষ হইবে -
44-44 : পাপীর খাদ্য;
44-45 : গলিত তাম্রের মত, উহাদের উদরে ফুটিতে থাকিবে
44-46 : ফুটন্ত পানির মত।
44-47 : উহাকে ধর এবং টানিয়া লইয়া যাও জাহান্নামের মধ্যস্থলে,
44-48 : অতঃপর উহার মস্তকের উপর ফুটন্ত পানি ঢালিয়া শাস্তি দাও -
44-49 : এবং বলা হইবে ‘আস্বাদ গ্রহণ কর, তুমি তো ছিলে সম্মানিত, অভিজাত!
44-50 : ‘ইহা তো উহাই, যে বিষয়ে তোমরা সন্দেহ করিতে।’
44-51 : মুত্তাকীরা তো থাকিবে নিরাপদ স্থানে -
44-52 : উদ্যান ও ঝর্ণার মাঝে,
44-53 : তাহারা পরিধান করিবে মিহি ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং মুখোমুখি হইয়া বসিবে।
44-54 : এইরূপই ঘটিবে; আমি উহাদেরকে সঙ্গিনী দান করিব আয়তলোচনা হুর,
44-55 : সেথায় তাহারা প্রশান্ত চিত্তে বিবিধ ফলমূল আনিতে বলিবে।
44-56 : প্রথম মৃত্যুর পর তাহারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করিবে না। আর তাহাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হইতে রক্ষা করিবেন -
44-57 : তোমার প্রতিপালক নিজ অনুগ্রহে। ইহাই তো মহাসাফল্য।
44-58 : আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করিয়া দিয়াছি, যাহাতে উহারা উপদেশ গ্রহণ করে।
44-59 : সুতরাং তুমি প্রতীক্ষা কর, উহারাও প্রতীক্ষমাণ।