আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক, Chapter: 50, ক্বাফ - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10060

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক

Chapter: 50, ক্বাফ

50-1 : ক্কাফ। ভেবে দেখো মহিমান্বিত কুরআনখানা।
50-2 : বস্তুত তারা আশ্চর্য হচ্ছে যে তাদের কাছে তাদেরই মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী এসেছেন, তাই অবিশ্বাসীরা বলছে - - ''এ তো এক আজব ব্যাপার!’’
50-3 : ''কী! আমরা যখন মরে যাব এবং ধুলো - মাটি হয়ে যাব? এ তো বহু দূর থেকে ফিরে আসা।’’
50-4 : আমরা আলবৎ জানি তাদের মধ্যের কতটুকু পৃথিবী হ্রাস করে ফেলে, আর আমাদের কাছে রয়েছে সুরক্ষিত গ্রন্থ।
50-5 : বস্তুত তারা সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল যখন তাদের কাছে তা এসেছিল, সেজন্য তারা সংশয়াকুল অবস্থায় রয়েছে।
50-6 : তারা কি তবে তাদের উপরকার আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে না - - আমরা কেমন ক’রে তা তৈরি করেছি এ বং তাকে সুশোভিত করেছি, আর তাতে কোনো ফাটলও নেই?
50-7 : আর পৃথিবী - - তাকে আমরা প্রসারিত করেছি আর তাতে স্থাপন করেছি পাহাড় - পর্বত, আর তাতে আমরা জন্মিয়েছি হরেক রকমের মনোরম বস্তু - -
50-8 : দেখার মতো ও মনোনিবেশ করার মতো বিষয় প্রত্যেক অনুরাগী বান্দার জন্য।
50-9 : আর আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করি আশীর্বাদসূচক জল, তারপর তার দ্বারা আমরা জন্মাই বাগানসমূহ ও খাদ্যশস্য যা তোলা হয়,
50-10 : আর লন্বা লন্বা খেজুর গাছ যাতে আছে গোছা গোছা কাঁদি, - -
50-11 : দাসদের জন্য জীবিকাস্বরূপ, আর এর দ্বারা আমরা মৃত ভূখন্ডে প্রাণ সঞ্চার করি। এইভাবেই হবে পুনরুত্থান।
50-12 : এদের আগে নূহ - এর স্বজাতি প্রত্যাখ্যান করেছিল, আর রস্‌ - এর অধিবাসীরা ও ছামুদ জাতি,
50-13 : আর 'আদ ও ফিরআউন ও লূত - এর ভাই - বন্ধুরা,
50-14 : আর আইকার অধিবাসীরা ও তুব্বার লোকদল; - - সবাই রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, সুতরাং আমার ওয়াদা সত্য বর্তেছিল।
50-15 : আমরা কি তবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি প্রথমবারের সৃষ্টি করেই? না, তারা নতুন সৃষ্টি সন্বন্ধে সন্দেহের মাঝে রয়েছে।
50-16 : আর আমরা তো নিশ্চয় মানুষ সৃষ্টি করেছি, আর আমরা জানি তার অন্তর তাকে কী মন্ত্রণা দেয়, আর আমরা কন্ঠশিরার চেয়েও তার আরো নিকটে রয়েছি।
50-17 : স্মরণ রেখো, দুইজন গ্রহণকারী গ্রহণ করে চলেছেন ডাইনে ও বাঁয়ে বসে।
50-18 : সে কোনো কথাই উচ্চারণ করে না যার জন্য তার নিকটেই এক তৎপর প্রখর প্রহরী নেই।
50-19 : আর মৃত্যুকালীন মূর্ছা সত্যি - সত্যি আসবে, - - ''এইটিই তো তাই যা থেকে তুমি অব্যাহতি চাও।’’
50-20 : আর শিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া হবে, ''এইটিই সেই প্রতি‌শ্রুত দিন।’’
50-21 : তখন প্রত্যেক সত্ত্বা চলে আসবে, তার সঙ্গে থাকবে এক চালক ও এক সাক্ষী।
50-22 : ''তুমি তো অবশ্য এ সন্বন্ধে গাফিলতিতে ছিলে, কিন্ত এখন আমরা তোমার থেকে তোমার আবরণী সরিয়ে দিয়েছি ফলে তোমার দৃষ্টি আজ তীক্ষ্ণ হয়েছে।
50-23 : আর তার সঙ্গী বলবে - - ''এই তো যা আমার কাছে তৈরি রয়েছে।’’
50-24 : ''তোমরা দুজনে জাহান্নামে ফেলে দাও প্রত্যেক অবিশ্বাসীকে, বিদ্রোহাচারীকে, - -
50-25 : ''ভালো কাজে নিষেধকারীকে, সীমালংঘনকারীকে, সন্দেহকারীকে - -
50-26 : ''যে আল্লাহ্‌র সঙ্গে অন্য উপাস্য দাঁড় করিয়েছিল, অতএব তোমরা উভয়ে তাকে নিক্ষেপ করো ভীষণ শাস্তিতে।’’
50-27 : আর তার সাঙ্গাত বলবে - - ''আমাদের প্রভু! আমি তো তাকে বিদ্রোহী বানাই নি, কিন্ত সে নিজেই ছিল সুদূর বিভ্রান্তিতে।’’
50-28 : তিনি বলবেন - - ''আমার সামনে তোমরা তর্কাতর্কি করো না, আর আমি তো তোমাদের কাছে ইতিপূর্বেই আমার ওয়াদা আগবাড়িয়েছি।
50-29 : ''আমার কাছে কথার রদবদল হয় না, এবং আমি আমার বান্দাদের প্রতি আদৌ অন্যায়াচারী নই।’’
50-30 : সেইদিন আমরা জাহান্নামকে বলব - - ''তুমি কি পূর্ণ হয়ে গিয়েছ?’’ আর সে বলবে - - ''আরো বেশি আছে কি?’’
50-31 : আর বেহেশতকে আনা হবে ধর্মভীরুদের নিকটে - - অদূরে।
50-32 : ''এইটিই তা যার প্রতি‌শ্রুতি তোমাদের দেওয়া হয়েছিল প্রত্যেক জন বারবার প্রত্যাবর্তনকারী হেফাজতকারীর জন্য - -
50-33 : ''যে পরম করুণাময়কে ভয় করত সংগোপনে, আর উপস্থিত হত বিনয় - নম্র হৃদয় নিয়ে।
50-34 : ''এতে প্রবেশ করো প্রশান্তির সাথে। এই তো চিরস্থায়ী দিন।’’
50-35 : এদের জন্য থাকবে তারা সেখানে যা চাইবে তাই, তার আমাদের কাছে রয়েছে আরো বেশি।
50-36 : আর তাদের আগে আমরা কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, তারা এদের চাইতে ছিল শক্তিতে বেশি প্রবল, ফলে তারা দেশে - বিদেশে অভিযান চালাত। কোনো আশ্রয়স্থল আছে কি?
50-37 : নিঃসন্দেহ এতে নিশ্চয়ই উপদেশ রয়েছে তার জন্য যার হৃদয় আছে, অথবা যে কান দেয়, আর সে সাক্ষ্য বহন কবে ।
50-38 : আর আমরা অবশ্য মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা - কিছু আছে তা সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে, আর কোনো ক্লান্তি আমাদের স্পর্শ করে নি।
50-39 : অতএব ওরা যা বলে তা সত্ত্বেও তুমি অধ্যবসায় চালিয়ে যাও এবং তোমার প্রভুর প্রশংসায় জপতপ করো সূর্য উদয়ের আগে ও অস্ত যাবার আগে,
50-40 : আর রাতের বেলাতেও তাঁর জপতপ করো, আর এই সিজদাগুলোর পরেও,
50-41 : আর শোনো সেইদিন যখন একজন ঘোষণাকারী আহ্বান করবেন নিকটবর্তী স্থান থেকে, - -
50-42 : সেইদিন তারা সত্যি - সত্যি মহাগর্জন শুনতে পাবে। এইটিই বেরিয়ে আসার দিন।
50-43 : নিঃসন্দেহ আমরা স্বয়ং জীবন দান করি এবং আমরাই মৃত্যু ঘটাই, আর আমাদের কাছেই শেষ - আগমন, - -
50-44 : সেইদিন পৃথিবী বিদীর্ণ হয়ে যাবে তাদের থেকে স্ত্রস্ত - ব্যস্তভাবে, এই হচ্ছে মহাসমাবেশ - - আমাদের জন্য সহজ ব্যাপার।
50-45 : ওরা যা বলে আমরা তা ভাল জানি, আর তুমি তাদের উপরে জবরদস্তি করার লোক নও। অতএব তুমি কুরআন নিয়ে স্মরণ করিয়ে চলো তার প্রতি যে আমার প্রতি‌শ্রুতিকে ভয় করে।