আল কুরআন: সমকালীন বাংলা অনুবাদ, Chapter: 17, আল ইসরা (রাত্রি ভ্রমণ) - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10070

আল কুরআন: সমকালীন বাংলা অনুবাদ

Chapter: 17, আল ইসরা (রাত্রি ভ্রমণ)

17-1 : পবিত্র ও মহিমময় তিনি যিনি তাঁহার বান্দাকে রজনীতে ভ্রমণ করাইয়াছিলেন আল - মসজিদুল হারাম হইতে আল - মসজিদুল আক্সা পর্যন্ত, যাহার পরিবেশ আমি করিয়াছিলাম বরকতময়, তাহাকে আমার নিদর্শন দেখাইবার জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
17-2 : আমি মূসাকে কিতাব দিয়াছিলাম ও উহাকে করিয়াছিলাম বনী ইস্রাঈলের জন্য পথনির্দেশক। আমি আদেশ করেছিলাম তোমরা আমাকে ব্যতিত অপর কাহাকেও কর্ম বিধায়করূপে গ্রহন করিও না।
17-3 : ‘হে তাহাদের বংশধর! যাহাদেরকে আমি নূহের সঙ্গে আরোহণ করাইয়াছিলাম ; সে তো ছিল পরম কৃতজ্ঞ বান্দা।’
17-4 : এবং আমি কিতাবে প্রত্যাদেশ দ্বারা বনী ইস্রাঈলকে জানাইয়াছিলাম, ‘নিশ্চয়ই তোমরা পৃথিবীতে দুইবার বিপর্যয় সৃষ্টি করিবে এবং তোমরা অতিশয় অহংকারস্ফীত হইবে।’
17-5 : অতঃপর এই দুইয়ের প্রথমটির নির্ধারিত কাল যখন উপস্থিত হইল তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করিয়াছিলাম আমার বান্দাদেরকে, যুদ্ধে অতিশয় শক্তিশালী; উহারা ঘরে ঘরে প্রবেশ করিয়া সমস্ত ধ্বংস করিয়াছিল। আর প্রতিশ্রুতি কার্যকরী হইয়াই থাকে।
17-6 : অতঃপর আমি তোমাদেরকে পুনরায় উহাদের উপর প্রতিষ্ঠিত করিলাম, তোমাদেরকে ধন ও সন্তান - সন্ততি দ্বারা সাহায্য করিলাম ও সংখ্যায় গরিষ্ঠ করিলাম।
17-7 : তোমরা সৎকর্ম করিলে সৎকর্ম নিজেদের জন্য করিবে এবং মন্দ কর্ম করিলে তাহাও করিবে নিজেদের জন্য। অতঃপর পরবর্তী নির্ধারিত কাল উপস্থিত হইলে আমি আমার বান্দাদেরকে প্রেরণ করিলাম তোমাদের মুখমণ্ডল কালিমাচ্ছন্ন করিবার জন্য, প্রথমবার তাহারা যেভাবে মসজিদে প্রবেশ করিয়াছিল পুনরায় সেইভাবেই উহাতে প্রবেশ করিবার জন্য এবং তাহারা যাহা অধিকার করিয়াছিল তাহা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করিবার জন্য।
17-8 : সম্ভবত তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের প্রতি দয়া করিবেন কিন্তু তোমরা যদি তোমাদের পূর্ব - আচরণের পুনরাবৃত্তি কর তবে আমিও পুনরাবৃত্তি করিব। জাহান্নামকে আমি করিয়াছি কাফিরদের জন্য কারাগার।
17-9 : নিশ্চয়ই এই কুরআন হিদায়াত করে সেই পথের দিকে যাহা সুদৃঢ় এবং সৎকর্মপরায়ণ মু’মিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাহাদের জন্য রহিয়াছে মহাপুরস্কার।
17-10 : এবং যাহারা আখিরাতে ঈমান আনে না তাহাদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি মর্মন্তুদ শাস্তি।
17-11 : আর মানুষ অকল্যাণ কামনা করে; যেইভাবে কল্যাণ কামনা করে ; মানুষ তো অতি মাত্রায় ত্বরাপ্রিয়।
17-12 : আমি রাত্রি ও দিবসকে করিয়াছি দুইটি নিদর্শন, রাত্রির নিদর্শনকে অপসারিত করিয়াছি এবং দিবসের নিদর্শনকে আলোকপ্রদ করিয়াছি যাহাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার এবং যাহাতে তোমরা বর্ষসংখ্যা ও হিসাব জানিতে পার; এবং আমি সব কিছু বিশদভাবে বর্ণনা করিয়াছি।
17-13 : প্রত্যেক মানুষের কর্ম আমি তাহার গ্রীবালগ্ন করিয়াছি এবং কিয়ামতের দিন আমি তাহার জন্য বাহির করিব এক কিতাব, যাহা সে পাইবে উন্মুক্ত।
17-14 : ‘তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব - নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’
17-15 : যাহারা সৎপথ অবলম্বন করিবে তাহারা তো নিজেদেরই মঙ্গলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করিবে এবং যাহারা পথভ্রষ্ট হইবে তাহারা তো পথভ্রষ্ট হইবে নিজেদেরই ধ্বংসের জন্য এবং কেহ অন্য কাহারও ভার বহন করিবে না। আমি রাসূল না পাঠান পর্যন্ত কাহাকেও শাস্তি দেই না।
17-16 : আমি যখন কোন জনপদ ধ্বংস করিতে চাই তখন উহার সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিদেরকে সৎকর্ম করিতে আদেশ করি, কিন্তু উহারা সেখানে অসৎকর্ম করে ; অতঃপর উহার প্রতি দণ্ডাজ্ঞা ন্যায়সংগত হইয়া যায় এবং আমি উহা সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করি।
17-17 : নূহের পর আমি কত মানবগোষ্ঠী ধ্বংস করিয়াছি! তোমার প্রতিপালকই তাঁহার বান্দাদের পাপাচরণের সংবাদ রাখা ও পর্যবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট।
17-18 : কেহ আশু সুখ - সম্ভোগ কামনা করিলে আমি যাহাকে যাহা ইচ্ছা এইখানেই সত্বর দিয়া থাকি ; পরে উহার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত করি যেখানে সে প্রবেশ করিবে নিন্দিত ও অনুগ্রহ হইতে দূরীকৃত অবস্থায়।
17-19 : যাহারা মু’মিন হইয়া আখিরাত কামনা করে এবং উহার জন্য যথাযথ চেষ্টা করে তাহাদের প্রচেষ্টা পুরস্কারযোগ্য।
17-20 : তোমার প্রতিপালক তাঁহার দান দ্বারা ইহাদেরকে ও উহাদেরকে সাহায্য করেন এবং তোমার প্রতিপালকের দান অবারিত।
17-21 : লক্ষ্য কর, আমি কীভাবে উহাদের এক দলকে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছি, আখিরাত তো নিশ্চয়ই মর্যাদায় মহত্তর ও গুণে শ্রেষ্ঠতর।
17-22 : আল্লাহর সাথে অপর কাউকে সাব্যস্ত করিও না, করিলে নিন্দিত ও লাঞ্চিত হইয়া পড়িবে।
17-23 : তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়াছেন তিনি ব্যতীত অন্য কাহারও ‘ইবাদত না করিতে ও পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করিতে। তাহাদের একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হইলে তাহাদেরকে ‘উফ্’ বলিও না এবং তাহাদেরকে ধমক দিও না ; তাহাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলিও।
17-24 : মমতাবশে তাহাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করিও এবং বলিও, ‘হে আমার প্রতিপালক! তাহাদের প্রতি দয়া কর যেভাবে শৈশবে তাহারা আমাকে প্রতিপালন করিয়াছিলেন
17-25 : তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের অন্তরে যাহা আছে তাহা ভাল জানেন ; যদি তোমরা সৎকর্ম পরায়ন হও তবেই তিনি আল্লাহ অভিমুখিদের প্রতি অতিশয় ক্ষমাশীল।
17-26 : আত্মীয় - স্বজনকে দিবে তাহার প্রাপ্য এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও এবং কিছুতেই অপব্যয় করিও না।
17-27 : যাহারা অপব্যয় করে তাহারা তো শয়তানের ভাই এবং শয়তান তাহার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।
17-28 : এবং যদি উহাদের হইতে তোমার মুখ ফিরাইতেই হয়, তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায়, তাহা হইলে উহাদের সঙ্গে নম্রভাবে কথা বলিও;
17-29 : তুমি তোমার হস্ত তোমার গ্রীবায় আবদ্ধ করিয়া রাখিও না এবং উহা সম্পূর্ণ প্রসারিতও করিও না, তাহা হইলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হইয়া পড়িবে।
17-30 : নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক যাহার জন্য ইচ্ছা তাহার রিযিক বর্ধিত করেন এবং যাহার জন্য ইচ্ছা উহা সীমিত করেন। তিনি তো তাঁহার বান্দাদের সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত, সর্বদ্রষ্টা।
17-31 : তোমাদের সন্তানদেরকে দারিদ্র্য - ভয়ে হত্যা করিও না। উহাদেরকেও আমিই রিযিক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয়ই উহাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।
17-32 : আর যিনার নিকটবর্তী হইও না। ইহা অশ্লীল ও নিকৃষ্ঠ আচরন।
17-33 : আল্লাহ যাহার হত্যা নিষিদ্ধ করিয়াছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাহাকে হত্যা করিও না। কেহ অন্যায়ভাবে নিহত হইলে তাহার উত্তরাধিকারীকে তো আমি উহা প্রতিকারের অধিকার দিয়াছি ; কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে ; সে তো সাহায্যপ্রাপ্ত হইয়াছেই।
17-34 : ইয়াতীম বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুপায়ে ছাড়া তোমরা তাহার সম্পত্তির নিকটবর্তী হইও না এবং প্রতিশ্রুতি পালন করিও; নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হইবে।
17-35 : মাপিয়া দিবার সময় পূর্ণ মাপে দিবে এবং ওজন করিবে সঠিক আল্লাহ ইহাই উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্ট।
17-36 : যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয় - উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।
17-37 : ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করিও না ; তুমি তো কখনই পদভরে ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করিতে পারিবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বতপ্রমাণ হইতে পারিবে না।
17-38 : এই সমস্তের মধ্যে যেগুলি মন্দ সেইগুলি তোমার প্রতিপালকের নিকট ঘৃণ্য।
17-39 : তোমার প্রতিপালক ওহীর দ্বারা তোমাকে যে হিকমত দান করিয়াছেন এইগুলি তাহার অন্তর্ভুক্ত। তুমি আল্লাহ সঙ্গে অপর ইলাহ্ স্থির করিও না, করিলে তুমি নিন্দিত ও বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হইবে।
17-40 : তোমাদের প্রতিপালক কি তোমাদেরকে পুত্র সন্তানের জন্য নির্বাচিত করিয়াছেন এবং তিনি কি নিজে ফিরিশ্তাগণকে কন্যারূপে গ্রহণ করিয়াছেন? তোমরা তো নিশ্চয়ই ভয়ানক কথা বলিয়া থাক !
17-41 : আর অবশ্যই আমি এই কুরআনে বহু বিষয় বারবার বিবৃত করিয়াছি যাহাতে উহারা উপদেশ গ্রহণ করে। কিন্তু ইহাতে উহাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়।
17-42 : বল, ‘যদি তাঁহার সঙ্গে আরও ইলাহ্ থাকিত যেমন উহারা বলে, তবে তাহারা আরশ অধিপতির প্রতিদ্বন্দি¡তা করিবার উপায় অন্বেষণ করিত।’
17-43 : তিনি পবিত্র, মহিমান্নিত এবং উহারা যাহা বলে তাহা হইতে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।
17-44 : সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং উহাদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছু তাঁহারই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নাই যাহা তাঁহার সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না ; কিন্তু উহাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করিতে পার না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।
17-45 : তুমি যখন কুরআন পাঠ কর তখন তোমার ও যাহারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাহাদের মধ্যে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা রাখিয়া দেই।
17-46 : আমি উহাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়াছি যেন উহারা তাহা উপলব্ধি করিতে না পারে এবং উহাদেরকে বধির করিয়াছি ; ‘তোমার প্রতিপালক এক’, ইহা যখন তুমি কুরআন হইতে আবৃত্তি কর তখন পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিয়া উহারা সরিয়া পড়ে।
17-47 : যখন উহারা কান পাতিয়া তোমার কথা শুনে তখন উহারা কেন কান পাতিয়া শুনে তাহা আমি ভাল জানি, এবং ইহাও জানি, গোপনে আলোচনাকালে জালিমরা বলে, ‘তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করিতেছ।’
17-48 : দেখ, উহারা তোমার কী উপমা দেয়! উহারা পথভ্রষ্ট হইয়াছে, ফলে উহারা পথ পাইবে না।
17-49 : উহারা বলে, ‘আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ - বিচূর্ণ হইলেও কি নূতন সৃষ্টিরূপে উত্থিত হইব?’
17-50 : বল, ‘তোমরা হইয়া যাও পাথর অথবা লৌহ।
17-51 : ‘অথবা এমন কিছু যাহা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন’; তাহারা বলিবে, ‘কে আমাদেরকে পুনরুত্থিত করিবে?’ বল, ‘তিনিই, যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করিয়াছেন।’ অতঃপর উহারা তোমার সম্মুখে মাথা নাড়িবে ও বলিবে, ‘উহা কবে?’ বল, ‘হইবে সম্ভবত শীঘ্রই,
17-52 : যেদিন তিনি তোমাদেরকে আহ্বান করিবেন, এবং তোমরা তাঁহার প্রশংসার সঙ্গে তাঁহার আহ্বানে সাড়া দিবে এবং তোমরা মনে করিবে, তোমরা অল্পকালই অবস্থান করিয়াছিলে।’
17-53 : আমার বান্দাদেরকে যাহা উত্তম তাহা বলিতে বল। নিশ্চয়ই শয়তান উহাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উস্কানি দেয় ; শয়তান তো মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।
17-54 : তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে ভালভাবে জানেন। ইচ্ছা করিলে তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং ইচ্ছা করিলে তোমাদেরকে শাস্তিদেন ; আমি তোমাকে উহাদের অভিভাবক করিয়া পাঠাই নাই।
17-55 : যাহারা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে আছে তাহাদেরকে তোমার প্রতিপালক ভালভাবে জানেন। আমি তো নবীগণের কতককে কতকের উপর মর্যাদা দিয়াছি ; দাঊদকে আমি যাবূর দিয়াছি।
17-56 : বল, ‘তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাহাদেরকে ইলাহ্ মনে কর তাহাদেরকে আহ্বান কর, করিলে দেখিবে তোমাদের দুঃখ - দৈন্য দূর করিবার অথবা পরিবর্তন করিবার শক্তি উহাদের নাই।’
17-57 : উহারা যাহাদেরকে আহ্বান করে তাহারাই তো তাহাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে যে, তাহাদের মধ্যে কে কত নিকটতর হইতে পারে, তাঁহার দয়া প্রত্যাশা করে ও তাঁহার শাস্তিকে ভয় করে। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি ভয়াবহ।
17-58 : এমন কোন জনপদ নাই যাহা আমি কিয়ামতের দিনের পূর্বে ধ্বংস করিব না অথবা যাহাকে কঠোর শাস্তি দিব না ; ইহা তো কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে।
17-59 : পূর্ববর্তীগণ কর্তৃক নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাকে নিদর্শন প্রেরণ করা হইতে বিরত রাখে। আমি শিক্ষাপ্রদ নিদর্শনস্বরূপ সামূদ জাতিকে উষ্ট্রী দিয়াছিলাম, অতঃপর তাহারা উহার প্রতি জুলুম করিয়াছিল। আমি কেবল ভীতি প্রদর্শনের জন্যই নিদর্শন প্রেরণ করি।
17-60 : স্মরণ কর, আমি তোমাকে বলিয়াছিলাম যে, নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক মানুষকে পরিবেষ্টন করিয়া আছেন। আমি যে দৃশ্য তোমাকে দেখাইয়াছি তাহা এবং কুরআনে আল্লাহ অভিশপ্ত বৃক্ষটিও কেবল মানুষের পরীক্ষার জন্য। আমি উহাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করি, কিন্তু ইহা উহাদের ঘোর অবাধ্যতাই বৃদ্ধি করে।
17-61 : স্মরণ কর, যখন ফিরিশতাদেরকে বলিলাম, ‘আদমকে সিজদা কর’, তখন ইবলীস ব্যতীত সকলেই সিজদা করিল। সে বলিয়াছিল, ‘আমি কি তাহাকে সিজ্দা করিব যাহাকে আপনি কর্দম হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন?’
17-62 : সে বলিয়াছিল, “আপনি কি বিবেচনা করিয়াছেন, আপনি আমার উপর এই ব্যক্তিকে মর্যাদা দান করিলেন, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন তাহা হইলে আমি অল্প কয়েকজন ব্যতীত তাহার বংশধরকে অবশ্যই কর্তৃত্বাধীন করিয়া ফেলিব।”
17-63 : আল্লাহ বলিলেন, ‘যাও, তাহাদের মধ্যে যাহারা তোমার অনুসরণ করিবে, তবে জাহান্নামই তোমাদের সকলের শাস্তি, পূর্ণ শাস্তি।
17-64 : ‘তোমার আহ্বানে উহাদের মধ্যে যাহাকে পার পদস্খলিত কর, তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা উহাদেরকে আক্রমণ কর এবং উহাদের ধনে ও সন্তান - সন্ততিতে শরীক হইয়া যাও ও উহাদেরকে প্রতিশ্রুতি দাও। শয়তান উহাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় উহা ছলনা মাত্র।
17-65 : নিশ্চয়ই ‘আমার বান্দাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নাই।’ কর্মবিধায়ক হিসাবে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।
17-66 : তোমাদের প্রতিপালক তিনিই যিনি তোমাদের জন্য সমুদ্রে নৌযান পরিচালিত করেন, যাহাতে তোমরা তাঁহার অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার। তিনি তো তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
17-67 : সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন কেবল তিনি ব্যতীত অপর যাহাদেরকে তোমরা আহ্বান করিয়া থাক তাহারা অন্তর্হিত হইয়া যায় ; অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে উদ্ধার করিয়া স্থলে আনেন তখন তোমরা মুখ ফিরাইয়া নাও। মানুষ অতিশয় অকৃতজ্ঞ।
17-68 : তোমরা কি নির্ভয় হইয়াছ যে, তিনি তোমাদেরকেসহ কোন অঞ্চল ধসাইয়া দিবেন না অথবা তোমাদের উপর শিলা বর্ষণকারী ঝঞ্ঝা প্রেরণ করিবেন না? তখন তোমরা তোমাদের কোন কর্মবিধায়ক পাইবে না।
17-69 : অথবা তোমরা কি নির্ভয় হইয়াছ যে, তিনি তোমাদেরকে আর একবার সমুদ্রে লইয়া যাইবেন না এবং তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ঝটিকা পাঠাইবেন না এবং তোমাদের কুফরী করার জন্য তোমাদেরকে নিমজ্জিত করিবেন না? তখন তোমরা এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাইবে না।
17-70 : আমি তো আদমসন্তানকে মর্যাদা দান করিয়াছি; স্থলে ও সমুদ্রে উহাদের চলাচলের বাহন দিয়াছি; উহাদেরকে উত্তম রিযিক দান করিয়াছি এবং আমি যাহাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি তাহাদের অনেকের উপর উহাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছি।
17-71 : স্মরণ কর, সেই দিনকে যখন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে উহাদের নেতাসহ আহবান করিব। যাহাদের দক্ষিণ হস্তে তাহাদের আমলনামা দেওয়া হইবে, তাহারা তাহাদের আমলনামা পাঠ করিবে এবং তাহাদের উপর সামান্য পরিমাণও জুলুম করা হইবে না।
17-72 : আর যে ব্যক্তি এইখানে অন্ধ সে আখিরাতেও অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট।
17-73 : আমি তোমার প্রতি যাহা প্রত্যাদেশ করিয়াছি তাহা হইতে উহারা পদস্খলন ঘটাইবার চেষ্টা প্রায় চূড়ান্তকরিয়াছিল যাহাতে তুমি আমার সম্বন্ধে উহার বিপরীত মিথ্যা উদ্ভাবন কর; তবেই উহারা অবশ্যই তোমাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করিত।
17-74 : আমি তোমাকে অবিচলিত না রাখিলে তুমি উহাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুঁকিয়া পড়িতে;
17-75 : তাহা হইলে অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে দ্বিগুণ ও পরজীবনে দ্বিগুণ শাস্তি আস্বাদন করাইতাম; তখন আমার বিরুদ্ধে তোমার জন্য কোন সাহায্যকারী পাইতে না।
17-76 : উহারা তোমাকে দেশ হইতে উৎখাত করিবার চূড়ান্ত চেষ্টা করিয়াছিল তোমাকে সেথা হইতে বহিষ্কার করিবার জন্য; তাহা হইলে তোমার পর উহারাও সেখানে অল্পকাল টিকিয়া থাকিত।
17-77 : আমার রাসূলগণের মধ্যে তোমার পূর্বে যাহাদেরকে পাঠাইয়াছিলাম তাহাদের ক্ষেত্রেও ছিল এইরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন পাইবে না।
17-78 : সূর্য হেলিয়া পড়িবার পর হইতে রাত্রির ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করিবে এবং কায়েম করিবে ফজরের সালাত। নিশ্চয়ই ফজরের সালাত উপস্থিতির সময়।
17-79 : এবং রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম করিবে, ইহা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করিবেন প্রশংসিত স্থানে।
17-80 : বল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে প্রবেশ করাও কল্যাণের সঙ্গে এবং আমাকে নিষ্ক্রান্ত করাও কল্যাণের সঙ্গে এবং তোমার নিকট হইতে আমাকে দান করিও সাহায্যকারী শক্তি।’
17-81 : এবং বল, ‘সত্য আসিয়াছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হইয়াছে;’ মিথ্যা তো বিলুপ্ত হইবারই।
17-82 : আমি অবতীর্ণ করি কুরআন, যাহা মু’মিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমত, কিন্তু উহা জালিমদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
17-83 : আমি যখন মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরাইয়া নেয় ও দূরে সরিয়া যায় এবং তাহাকে অনিষ্ট স্পর্শ করিলে সে একেবারে হতাশ হইয়া পড়ে।
17-84 : বল, ‘প্রত্যেকেই নিজ প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ করিয়া থাকে এবং তোমার প্রতিপালক সম্যক অবগত আছেন চলার পথে কে সর্বাপেক্ষা নির্ভুল।’
17-85 : তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’
17-86 : তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’
17-87 : ইচ্ছা করিলে আমি তোমার প্রতি যাহা ওহী করিয়াছি তাহা অবশ্যই প্রত্যাহার করিতে পারিতাম; তাহা হইলে এই বিষয়ে তুমি আমার বিরুদ্ধে কোন কর্মবিধায়ক পাইতে না।
17-88 : ইহা প্রত্যাহার না করা তোমার প্রতিপালকের দয়া; তোমার প্রতি আছে তাঁহার মহাঅনুগ্রহ।
17-89 : বল, ‘যদি কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনয়নের জন্য মানুষ ও জিন সমবেত হয় এবং যদিও তাহারা পরস্পরকে সাহায্য করে তবুও তাহারা ইহার অনুরূপ আনয়ন করিতে পারিবে না।
17-90 : ‘আর অবশ্যই আমি মানুষের জন্য এই কুরআনে বিভিন্ন উপমা বিশদভাবে বর্ণনা করিয়াছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কুফরী করা ব্যতীত ক্ষান্ত হইল না।’
17-91 : এবং উহারা বলে, ‘আমরা কখনই তোমাতে ঈমান আনিব না, যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য ভূমি হইতে এক প্রস্রবণ উৎসারিত করিবে,
17-92 : ‘অথবা তোমার খেজুরের ও আংগুরের এক বাগান হইবে যাহার ফাঁকে ফাঁকে তুমি অজস্র ধারায় প্রবাহিত করিয়া দিবে নদী - নালা।
17-93 : ‘অথবা তুমি যেমন বলিয়া থাক, তদনুযায়ী আকাশকে খণ্ড - বিখণ্ড করিয়া আমাদের উপর ফেলিবে অথবা আল্লাহ ও ফেরেশতাগনকে আমাদের সম্মুখে উপস্থিত করিবে।
17-94 : ‘অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হইবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করিবে, কিন্তু তোমার আকাশ আরোহণে আমরা কখনও ঈমান আনিব না যতক্ষণ তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ না করিবে যাহা আমরা পাঠ করিব।’ বল, ‘পবিত্র মহান আমার প্রতিপালক! আমি তো হইতেছি কেবল একজন মানুষ, একজন রাসূল।’
17-95 : যখন উহাদের নিকট আসে পথনির্দেশ তখন লোকদেরকে ঈমান আনা হইতে বিরত রাখে উহাদের এই উক্তি আল্লাহ রাসুলকে কি মানুষ করিয়া পাঠাইছেন?
17-96 : বল, ‘আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ যথেষ্ট; তিনি তো তাঁহার বান্দাদেরকে সবিশেষ জানেন ও দেখেন।’
17-97 : আল্লাহ যাহাদেরকে পথনির্দেশ করেন তাহারা তো পথপ্রাপ্ত এবং যাহাদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনই তাঁহাকে ব্যতীত অন্য কাহাকেও উহাদের অভিভাবক পাইবে না। কিয়ামতের দিন আমি উহাদেরকে সমবেত করিব উহাদের মুখে ভর দিয়া চলা অবস্থায় অন্ধ, মূকবধির করিয়া। উহাদের আবাসস্থল জাহান্নাম; যখনই উহা স্তিমিত হইবে আমি তখনই উহাদের জন্য অগ্নিশিখা বৃদ্ধি করিয়া দিব।
17-98 : ইহাই উহাদের প্রতিফল, কারণ উহারা আমার নিদর্শন অস্বীকার করিয়াছিল ও বলিয়াছিল, ‘অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ - বিচূর্ণ হইলেও আমরা কি নূতন সৃষ্টিরূপে পুনরুত্থিত হইব?’
17-99 : উহারা কি লক্ষ্য করে না যে, আল্লাহ যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন তিনি উহাদের অনুরূপ সৃষ্টি করিতে ক্ষমতাবান? তিনি উহাদের জন্য স্থির করিয়াছেন এক নির্দিষ্ট কাল, যাহাতে কোন সন্দেহ নাই। তথাপি সীমালংঘনকারীরা কুফরী করা ব্যতীত ক্ষান্ত হইল না।
17-100 : বল, ‘যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভাণ্ডারের অধিকারী হইতে, তবুও ‘ব্যয় হইয়া যাইবে’ এই আশংকায় তোমরা উহা ধরিয়া রাখিতে; মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।’
17-101 : তুমি বনী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করিয়া দেখ আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়াছিলাম; যখন সে তাহাদের নিকট আসিয়াছিল, ফির‘আওন তাহাকে বলিয়াছিল, ‘হে মূসা! আমি মনে করি তুমি তো জাদুগ্রস্ত।’
17-102 : মূসা বলিয়াছিল, ‘তুমি অবশ্যই অবগত আছ যে, এই সমস্ত স্পষ্ট নিদর্শন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালকই অবতীর্ণ করিয়াছেন - প্রত্যক্ষ প্রমাণস্বরূপ। হে ফির‘আওন! আমি তো দেখিতেছি তোমার ধ্বংস আসন্ন!’
17-103 : অতঃপর ফির‘আওন তাহাদেরকে দেশ হইতে উচ্ছেদ করিবার সংকল্প করিল; তখন আমি ফির‘আওন ও তাহার সঙ্গীদের সকলকে নিমজ্জিত করিলাম।
17-104 : ইহার পর আমি বনী ইস্রাঈলকে বলিলাম, ‘তোমরা ভূপৃষ্ঠে বসবাস কর এবং যখন কিয়ামতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হইবে তখন তোমাদের সকলকে আমি একত্র করিয়া উপস্থিত করিব।
17-105 : আমি সত্যসহই কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি এবং উহা সত্যসহই অবতীর্ণ হইয়াছে। আমি তো তোমাকে কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করিয়াছি।
17-106 : আমি কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি খণ্ড খণ্ডভাবে যাহাতে তুমি উহা মানুষের নিকট পাঠ করিতে পার ক্রমে ক্রমেএবং আমি উহা ক্রমশ অবতীর্ণ করিয়াছি।
17-107 : বল, ‘তোমরা কুরআনে বিশ্বাস কর বা বিশ্বাস না কর, যাহাদেরকে ইহার পূর্বে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে তাহাদের নিকট যখন ইহা পাঠ করা হয় তখনই তাহারা সিজ্দায় লুটাইয়া পড়ে।’
17-108 : তাহারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক পবিত্র, মহান। আমাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি কার্যকরী হইয়াই থাকে।
17-109 : ‘এবং তাহারা কাঁদিতে কাঁদিতে ভূমিতে লুটাইয়া পড়ে এবং ইহা উহাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’
17-110 : বল, ‘তোমরা আল্লাহ নামে আহ্বান কর বা ‘রাহমান’ নামে আহ্বান কর, তোমরা যে নামেই আহ্বান কর সকল সুন্দর নামই তো তাঁহার। তোমরা সালাতে স্বর উচ্চ করিও না এবং অতিশয় ক্ষীণও করিও না; এই দুইয়ের মধ্যপথ অবলম্বন কর।’
17-111 : বল, ‘প্রশংসা আল্লাহ যিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেন নাই, তাঁহার সার্বভৌমত্বে কোন অংশী নাই এবং যিনি দুর্দশাগ্রস্তহন না যে কারণে তাঁহার অভিভাবকের প্রয়োজন হইতে পারে। সুতরাং সসম্ভ্রমে তাঁহার মহাক্রম ঘোষণা কর।’